ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৫ পুলিশ আহত, আটক ৭

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৩
সিলেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৫ পুলিশ আহত, আটক ৭

সিলেট: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে নগরের জিন্দাবাজারে এ ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এসময় পিকেটারদের ইটের আঘাতে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।

এই ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তাৎক্ষণিক আহত ৫ পুলিশ সদস্য ও আটক সাত নেতাকর্মীর নাম জানাতে পারেননি তিনি।

পুলিশ জানায়, রোববার দুপুরে হরতালের সমর্থনে নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় কাজি ইলিয়াস ও তাঁতিপাড়ার গলি থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করে ছাত্রদল। সে সময় পুলিশ দেখে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি নিক্ষেপ করা হয়। পিকেটারদের ইটের আঘাতে কর্তব্যরত ৫ পুলিশ সদস্য আহত হলে তাৎক্ষণিক তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেসময় দৈনিক খবরের কাগজের ফটো সাংবাদিক মামুন হোসেনের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে বিএনপির এক কর্মী।

এরআগে রোববার সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল বের করার চেষ্টা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বেশিরভাগ এলাকায় পুলিশি বাধার মুখে পড়লেও কিছু কিছু এলাকায় ভাঙচুর চালায় তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারার পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে ভীতির সঞ্চার ঘটায় তারা। তবে পুলিশ ধাওয়া করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তারা সটকে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।

সকাল ৯টার দিকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ২০/২৫ জনের পিকেটার দল নগরের জেলরোড পয়েন্টে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। সেসময় টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে আশপাশে অলিগলিতে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়।

সকাল ১০টার দিকে নগরের দরগাহ গেটে একটি রিকশায় আগুন দেয় পিকেটাররা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ সুরমায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক গাছ ফেলে অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। একই সময়ে মহাসড়কে দক্ষিণ সুরমার তেতলি পয়েন্টে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে হরতালকারীরা।

এছাড়া ৩০/৩৫টি মোটরসাইকেলে বিএনপি নেতাকর্মীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্তত ১০/১২টি গাড়িতে ভাঙচুর করে এবং পুলিশ পৌঁছার আগেই সটকে পড়ে।  

এছাড়া দুপুরে নগরের মীরাবাজার এলাকায় দুটি হিউম্যান হলার (ইমা লেগুনা) ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গেলেও পিকেটাররা সটকে পড়ে।  

হরতালে দোকানপাট খোলা থাকলেও বেশিরভাগ বন্ধ রয়েছে। তবে নগরজুড়ে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সিলেট থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি আজ। যদিও আগেরদিন মালিক-শ্রমিক নেতারা গণমাধ্যমে হরতালে গাড়ি চালানোর ঘোষণা দেন। তবে হরতালে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

হরতালে সিলেটের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তায় পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ, সিআরটি ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৯ সদস্যরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছে।

উল্লেখ্য, শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের দিকে মহাসমাবেশে হট্টগোল চলার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার সারা দেশে হরতালের ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৩
এনইউ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।