ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘মেঘনায় ইলিশ নেই, সাগরেও কম’

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
‘মেঘনায় ইলিশ নেই, সাগরেও কম’

লক্ষ্মীপুর: জেলার রামগতির আলেকাজান্ডার মাছঘাটে মৌসুমজুড়ে থাকে মাছের বেচা-বিক্রি। কিন্তু ভরা মৌসুমেও অন্য সময়ের জমজমাট এ ঘাটে তেমন একটা দেখা মেলেনি ইলিশের।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে অল্প পরিমাণ ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছ এ ঘাটে। এর মধ্যে বেশিরভাগ মাছই ছিল সাগরের। মেঘনা নদীর মাছ দেখা মেলেনি ঘাটে।

মাছ শিকার এবং বেচা-বিক্রি নিয়ে কথা হয় এ ঘাটের জেলে, আড়তদার ও মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তারা জানান, ভরা মৌসুমেও সাগরে জেলেদের জালে তেমন একটা ইলিশ ধরা পড়ছে না। তাই ঘাটেও বেচা-বিক্রির জমজমাট অবস্থা নেই।

রামগতির আলেকজান্ডার এলাকার জেলে মাকছুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ট্রলারে করে ২০ জনের দল নিয়ে সাগরে মাছ শিকার করি। চারদিন সাগরে অবস্থান নিয়ে মাছ শিকার করে ঘাটে ফিরেছি। যে মাছ পেয়েছি, সেগুলো চার লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এখন মাছ কম। এ সময়টাতে সাগরে ভরপুর ইলিশ থাকার কথা ছিল।

ট্রলার মালিক ইব্রাহিম বাংলানিউজকে বলেন, আমার ট্রলারে ১২ জন মাঝিমাল্লা থাকে। সাগরেই মাছ শিকার করি। সর্বশেষ যে মাছ জালে ধরা পড়েছে, তা বিক্রি করেছি এক লাখ ৭০ হাজার টাকায়। খরচ হয়েছে লাখ টাকার বেশি। এখনকার থেকেও গেল বছরের ঠিক এ সময়টাতে সাগরে মাছ কিছুটা বেশি ছিল।

মেঘনা নদীর জেলে শাকিল ও আল-আমিন জানান, আমাদের ছোট নৌকা, তাই সাগরে যেতে পরি না। নদীতেই জাল ফেলতে হয়। কিন্তু মেঘনা নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। সাগরে কিছু মাছ পাওয়া যায়। তিন থেকে চার দিনের জন্য গভীর নদীতে মাছ শিকারে যাই। ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। ৬০-৭০ টাকার মাছ পাই। যা পাই, তা বিক্রি করে পোষায় না।

আলেকজান্ডার মাছঘাট থেকে পাইকারি মাছ ক্রয় কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন মোহাতার। শুক্রবার দুপুরে মাছ কিনতে আসেন তিনি। কিন্তু ঘাটে মেঘনার মাছের তেমন একটা দেখা পাননি। তবে সাগর থেকে আসা ট্রলারের মাছ ক্রয় করেছেন তিনি। তাও উচ্চ দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে তাকে।

শুক্রবার দুপুরে এ ঘাটে প্রায় দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি (৪টি) বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। ৮০০ গ্রাম ওজনের মাছের হালি ৩ হাজার ২০০ টাকা, আর ছোট আকারে জাটকা (প্রতিটি ২০০ গ্রাম ওজনের) মাছের হালি বিক্রি হয়েছে ৪২০ টাকায়। ক্রেতা এবং আড়ৎদাররা বলছেন, এগুলো সাগরের মাছ। নদীর ইলিশ হলে দাম আরও বেশি হতো। কারণ ক্রেতাদের কাছে নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি থাকে।

ফরহাদ নামে একজন আড়তদার বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম এখন। নদী এবং সাগরের মাছে ঘাট ভরপুর থাকতো। কিন্তু পরিবেশ এখন একেবারে উল্টো। ঘাটে মাছ নেই। সাগর বা নদীর জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ছে না। তাই ঘাটেও বেচা-বিক্রির জমজমাট পরিবেশ নেই। নদীর তীরবর্তী প্রায় সবগুলো ঘাটে পরিস্থিতি একই বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।