ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আর কত সাংবাদিক হত্যার শিকার হবেন?

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
আর কত সাংবাদিক হত্যার শিকার হবেন?

কুষ্টিয়া: বাংলানিউজের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।

এ হত্যার বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

 

শুক্রবার (১৬ জুন) সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন হয়।
 
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি গোলম মওলা, কোষাধ্যক্ষ এম লিটন উজ জামান, বাংলাভিশন টেলিভিশনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসান আলী, নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুজ্জামান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার শরীফ বিশ্বাস, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি এসএম রাশেদ, দৈনিক সাগরখালী পত্রিকার প্রকাশক ও  সম্পাদক মহাম্মদ আলী জোয়ার্দ্দার, দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি দেবেশ চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি দেলোয়ার মানিক, মিরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রিমন এবং বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জাহিদ হাসান।  

নাদিম হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত আরও নিউজ

মানববন্ধনে অনেকের মধ্যে দৈনিক হাওয়া পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শেহাব উদ্দীন, ডেইলি সান পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রেজাউল করিম রেজা, দৈনিক পথিকৃৎ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহারিয়া ইমন রুবেল, বিজয় টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রিয়াজুল ইসলাম সেতু, সংবাদ প্রতিদিনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম ইভান, কুষ্টিয়া দর্পণপত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসলাম আলী, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সুজন আহম্মেদ, পরিবর্তন ডটকমের মেজবা উদ্দিন পলাশ, ব্রেকিংনিউজ ডটকম ডটবিডির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি খালিদ সাইফুল, কুষ্টিয়া দর্পণের স্টাফ রিপোর্টার আবীর হাসান স্বাধীন, কুষ্টিয়া পোস্ট এর স্টাফ রিপোর্টার নাইমুর রহমান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা পার্সন এসআই সুমন, নিউজটোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা পার্সন আরাফাত আলী, কুষ্টিয়ার খবরের স্টাফ রিপোর্টার আলামিন হোসেনসহ অনেকে।  

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে আর কত সাংবাদিক হত্যার শিকার হবেন? গুটি কয়েক সন্ত্রাসীর কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আজ পর্যন্ত সাংবাদিকদের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় একের পর এক সাংবাদিকরা হত্যার স্বীকার হচ্ছেন। জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশিগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত সাংবাদিকের মরদেহ রাতে তার নিজবাড়ি গরুহাটিতে নেওয়া হয়।  

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের জামালপুর করেসপন্ডেন্ট ও একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন।

বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে নিউজ করার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন নাদিমের স্বজনরা।  

মৃত্যুর আগে নাদিম নিজেও হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত ১০ মে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ নিয়ে বাংলানিউজে ‘দুইবার বিয়ের পরও সন্তান-স্ত্রীকে অস্বীকার করছেন ইউপি চেয়ারম্যান!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরে ১৪ মে তার স্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ‘আমি আমার স্বামী চাই, একসঙ্গে সংসার করতে চাই’ শিরোনামে বাংলানিউজে আরও একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।  
পরে ২০ মে সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামী মাহমুদুল আলম বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার অথবা পদ থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। বাবু জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়েও বাংলানিউজে ‘আ.লীগ থেকে স্বামীর বহিষ্কার চেয়ে স্ত্রীর আবেদন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।  
এর আগে গত ১৪ মে ময়মনসিংহ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে জামালপুরের নাদিমসহ চার সাংবাদিকের নামে মামলা করেন সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। ৩০ মে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

নিহত গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম  বাবু সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে নাদিমের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। আগেও তিনি নানাভাবে তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনই তাকে হত্যা করেছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এরও আগে গত ১১ এপ্রিল হামলার শিকার হয়েছিলেন নাদিম। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগমের সমর্থকরা এ হামলা করেন। গত ১০ জানুয়ারিবকশীগঞ্জে আ. লীগের কমিটিতে রাজাকারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের জেরে হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।