ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গোপালগঞ্জে ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২৪

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
গোপালগঞ্জে ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২৪

গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে আহত ইয়াসিন শেখ (৩৫) মারা গেছেন।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ভোরে রাজারবাগ পু‌লিশ লাই‌নের সাম‌নের বি এম‌ কে  প্রাই‌ভেট হাসপাতা‌লে তার মৃত্যু হয়।

ইয়াসিনের ভাবি আমেনা বেগম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

নিহত ইয়াসিন সদর উপজেলার চরমানিকদাহ গ্রামের রাজ্জাক সেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ট্রলি চালক ছিলেন।

এখন পর্যন্ত ইয়াসিনের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশ জানে না বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

এর আগে, সোমবার (২০ মার্চ) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফলাফল বাতিলের দাবিতে পরাজিত তিন সদস্য (মেম্বার) প্রার্র্থীর সমর্থকরা নির্বাচনী মালামাল (ইভিএম মেসিন) আটকে দিলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে সদর থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুদ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্যসহ আহত হয় অন্তত ২৫ জন। আর পুলিশের গুলিতে তিনজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ইয়াসিন শেখ মারা গেছেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরমানিকদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত হন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ (৪৫), উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আলম (৩৫), সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আসাদুজ্জামান (৪২), পুলিশ সদস্য রোকন মিয়া (২৮), মুস্তাফিজুর রহমান (৫৫), পারভেজ (৩২), ২৩ আনসার ব্যাটেলিয়ানের সহকারি প্লাটন কমান্ডার মো. হায়দার আলী (৫৮), আনসার সদস্য সবুজ বালা (৩২), শাওন বিশ্বাস (২২), লক্ষ্ম বিশ্বাস (১৮), এসিল্যান্ডের ড্রাইভার ইব্রাহিম শরীফ (৩৩)।

এছাড়া গুলিবিদ্ধ হন- ইয়াসিন শেখ (৩৫), কালাম শেখ (৩৫) ও সম্রাট মোল্লা (৩২)।

জানা গেছে, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী ফলাফলে সদস্য প্রার্থী সাবু মোল্লাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচনী মালামাল নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা জেলা সদরে ফেরার সময় পরাজিত অপর তিন প্রার্র্থী মতিয়ার রহমান ফকির, পলু মোল্লা ও ইব্রাহিম কাজী নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান। এ সময় তারা তাদের সমর্থকদের নিয়ে হামলা চালিয়ে নির্বাচনী মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ শর্ট গানের গুলি চালায় এবং তাতে তিনজন আহত হন। এর মধ্যে ইয়াসিন শেখ ও কালাম শেখকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও ইভিএম ছিনতাইয়ের ঘটনায় অজ্ঞাত ১ হাজার জনকে আসামি করে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ জানান, লতিফপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবিতে পরাজিত তিন প্রার্র্থীর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হয়। এতে সদর থানার ওসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এ সময় সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ওসির গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

তিনি আরও জানান, সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গণেশ বিশ্বাস বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে অজ্ঞাত ৪-৫’শ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে, ইভিএম ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রিজাইজিং অফিসার সেলিম তালুকদার বাদী হয়ে আবারও অজ্ঞাত ৪/৫’শ জনকে আসামি করে অপর একটি মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩ 
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।