ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তামাক টেকসই উন্নয়নে বাধা, আইন শক্তিশালী করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
তামাক টেকসই উন্নয়নে বাধা, আইন শক্তিশালী করার দাবি

ঢাকা: তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের কোনো বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিপিএফ) সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ ও তামাকবিরোধী নেতারা এসব কথা বলেন।

ভার্চ্যুয়াল বৈঠক থেকে জানানো হয়, দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং পঙ্গুত্ব বরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতা এসডিজর ৩য় লক্ষ্যমাত্রা- সুস্বাস্থ্য অর্জনের একটি বড় বাধা। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ব্যয় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে তামাক ব্যবহারে দরিদ্র মানুষ, আরও দরিদ্র হয়ে পড়ছে, যা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা-১ অর্জনে বড় বাধা।  

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া সংশোধনের বিভিন্ন ধারা ভুলভাবে উপস্থাপন করে জনগণ, নীতিনির্ধারক এবং এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আমি ধন্যবাদ জানাই। সংশোধনী প্রস্তাবগুলো যেন শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে। কোম্পানিগুলোর লম্বা হাত যেন সেখানে না ঢুকতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিতে সরকারের যে মালিকানা আছে সেটা ছেড়ে দিতে হবে এবং যারা নীতি নির্ধারণ করেন তারা যেন রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে তামাকের কারণে স্বাস্থ্য খাতে যে ব্যয় হয় সেই দিকটা দেখেন।

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমাদের তরুণদেরকে বোঝাতে হবে ধূমপান ছেড়ে দিলে তারা ভালো থাকবে। হার্টের অসুখ, ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যাবে।   

সিবিএফক বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তামাক কোম্পানিগুলোর জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির বিপরীতে কোনো যৌক্তিক বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ নেই। তাই তারা আইন সংশোধন ঠেকাতে মানুষের কর্মসংস্থান কমে যাওয়া, সরকার রাজস্ব হারানো ইত্যাদি  ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন প্রমুখ।

আত্মা’র কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
আরকেআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।