ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

খুঁড়িয়ে হাঁটা শুটার মাসুম নিশ্চুপ ছিলেন কাঠগড়ায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
খুঁড়িয়ে হাঁটা শুটার মাসুম নিশ্চুপ ছিলেন কাঠগড়ায়

ঢাকা: রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও স্কুলছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় গ্রেফতার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে সাত দিনের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

রিমান্ড শুনানির জন্য সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাকে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়।

এ সময় তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাঠগড়ায় প্রবেশ করেন। দাঁড়াতে পারছিলেন না বলে বিচারকের নির্দেশে হেলমেট, জ্যাকেট ও হাতকড়া খুলে দিয়ে তাকে টুলে বসতে দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আসামির ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।  

রিমান্ড শুনানিতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত জোড়া খুনের মামলা। জাহিদুল ইসলাম টিপু আওয়ামী লীগ নেতা। তার রক্তে আওয়ামী লীগ মিশে আছে। এ আসামি তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন। একজন কলেজছাত্রীর জীবনও শেষ হয়ে গেছে। যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে তা এখনো উদ্ধার হয়নি। আকাশ যে মোটরসাইকেলে এসেছিল তাও উদ্ধার করা যায়নি। এ অবস্থায় ঘটনার মূলহোতা, ইন্ধনদাতা ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও আলামত উদ্ধারের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাই এই আসামির ১৫ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। ’

আসামিপক্ষে শাহনাজ বেগম মনি রিমান্ড বাতিল চান। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ নেতা কেন, একজন সাধারণ মানুষ খুন হলেও আমরা সেই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে আমার মোয়াক্কেল জড়িত না। আসামি একটি চাকরি করতেন। অফিসিয়াল ছুটি নিয়ে তিনি বগুড়ায় কাজে গিয়েছিলেন। ঘটনার পর তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার হাতের ও পায়ের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ’

তখন বিচারক বলেন, ‘তার যে নখ তোলা হয়েছে তা তো দেখতে পাচ্ছি না। ’ এরপর আইনজীবী শাহনাজ বেগম মনি বলেন, তাকে যা জিজ্ঞাসাবাদ করার তা করা হয়েছে। আরও প্রয়োজন হলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কাজেই তার রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি। ’ তখন বিচারক আইনজীবীর কাছে জানতে চান, আপনার আসামি কী করেন? তিনি কেন সেখানে গিয়েছিলেন?

তখন আইনজীবী মাসুমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তবে মাসুম কোনো উত্তর দেননি। তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। এরপর আদালত মাসুমের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এর আগে রোববার মাসুমকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। গ্রেফতার মাসুম টিপুকে সরাসরি গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের পর কিলার মাসুম দেশ ত্যাগ করতে সীমান্ত এলাকায়ও চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ।

রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের তিনদিন আগে টার্গেট ব্যক্তির (টিপু) নাম জানতে পারেন তিনি।

গত ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাজাহানপুর এলাকায় গুলি করে টিপু ও কলেজ ছাত্রী প্রীতিকে হত্যা করা হয়। পরদিন নিহত টিপুর স্ত্রী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।  

আরও পড়ুন>>>

>>> টিপু হত্যা: ৭ দিনের রিমান্ডে শুটার মাসুম

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
কেআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।