ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

নারী কাজী: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আয়েশা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
নারী কাজী: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আয়েশা

ঢাকা: দেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি ৪ এপ্রিল নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপারসন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম।

পরে ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিটকারী আয়েশা সিদ্দিকা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছেন। মঙ্গলবার চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ৪ এপ্রিল দিন রেখেছেন।

তিনি বলেন, আয়েশা সিদ্দিকাকে আইনগত সহায়তা দিচ্ছে ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।

২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। চলতি বছরের শুরুতে ওই রায়ের পূর্ণঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির।

তিনি ১০ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়ার পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে আয়েশা সিদ্দিকাসহ তিনজন নারীর নামের একটি তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ওই প্রস্তাব বাতিল করে দেয়।

একই সালে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ওই তালিকার এক নম্বরে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এ অবস্থায় ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির জানান, রায়ে বলা হয়, বর্তমানে একটি ট্রেন্ড হলো স্থানীয় মসজিদে নিকাহ সম্পন্ন করা। মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একজন নারী মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না। এমনকি ওই সময়ে বাধ্যতামূলক দৈনন্দিন প্রার্থনা থেকেও তাদের রেহাই দেওয়া হয়েছে। এ শারীরিক ডিসকোয়ালিফিকেশন (নির্দিষ্ট সময়) তাকে ধর্মীয় কাজের অনুমতি দেয় না। মুসলিমদের বিয়ে একটি ধর্মীয় আচার।

রায়ে আরও বলা হয়, এখানে বিতর্ক নেই যে, আমাদের সংবিধান নারী ও পুরুষের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অন্য পাবলিক অফিসে নারীরা যে ধরনের কাজ করেন, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে কার্যক্রমটা সম্পূর্ণ আলাদা।

এসব পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ১৬ জুনের আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ না করে রুল খারিজ করে দেন বলে জানান হুমায়ুন কবির। এ রায়ের ফলে নারীদের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিটকারী আয়েশা সিদ্দিকা।

বাংলাদেশ: ২০১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।