ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বিশ্বজিৎ হত্যায় ২ জনের ফাঁসি বহাল, ৪ জনের যাবজ্জীবন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৭
বিশ্বজিৎ হত্যায় ২ জনের ফাঁসি বহাল, ৪ জনের যাবজ্জীবন নিহত বিশ্বজিৎ দাস

ঢাকা: পুরান ঢাকার টেইলার্স শ্রমিক বিশ্বজিৎ দাস হত্যার দায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ২১ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। পলাতক বাকি ১১ আসামি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। 

বিচারিক আদালতের রায়ে ফাঁসির আদেশ পাওয়া ৮ জনের মধ্যে রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে। তাদের মধ্যে রাজন পলাতক।

অন্য ছয়জনের মধ্যে মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন ও মীর মোহাম্মদ নূরে আলম লিমনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। লিমন পলাতক থাকলেও অন্য তিনজন কারাগারে আছেন।

খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম সাইফুল ও কাইয়ূম মিয়া টিপু বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। আর গোলাম মোস্তফা মোস্তফা ও এ এইচ এম কিবরিয়াকে দেওয়া হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যে ১১ আসামির বিষয়ে হাইকোর্ট কোনো মন্তব্য করেননি, তারা হলেন- খন্দকার মো. ইউনুস আলী ইউনুস, তারিক বিন জহুর তমাল, মো. আলাউদ্দিন, মো. ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন ইমরান, আজিজুর রহমান আজিজ, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোহম্মদ কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন মোশাররফ।

রোববার (০৬ আগস্ট) চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটির ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের এ রায় দেন বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। সকাল ১০টা ৫০ মিনিট থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মাঝে বিরতি দিয়ে দীর্ঘ রায়টি দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান জানান, যে পলাতক ১১ আসামির বিষয়ে মন্তব্য করেননি হাইকোর্ট, তারা গ্রেফতার হলে বা আত্মসমর্পণ করলে তাদের বিষয়ে পরবর্তী বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।
 
এ মামলায় আটটি আপিল ও সাতটি জেল আপিল করেন আসামিরা। এসব আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি একসঙ্গে নিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

২০১২ সালের ০৯ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ হত্যা মামলার রায়ে ২১ আসামির  মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক।

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। এরপর ১৫টি আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে হাইকোর্টে আসে।

পেপারবুক উপস্থাপনের পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

গত ১৬ মে থেকে মোট ১৫ দিনের মতো এ মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়েছে হাইকোর্টে। ১৩ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ ও ১৭ জুলাই আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এস এম শাহজাহান, লুতফর রহমান মন্ডল, সৈয়দ আলী মোকাররম, সৈয়দ শাহ আলম, মো. আব্দুস সালাম, মো. ইসা, সৈয়দ মাহমুদুল আহসান।

পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন মোমতাজ বেগম।

গত ১৭ জুলাই শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

** বিশ্বজিৎ হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের অপেক্ষা
** বিশ্বজিৎ হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় চলছে

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৭
ইএস/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।