ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

মুফতি হান্নানের রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
মুফতি হান্নানের রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশ

ঢাকা: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে ৫ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে রায়ে স্বাক্ষর করেন রায় প্রদানকারী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৩ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

অন্য দুই বিচারপতি হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

মুফতি হান্নানসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চূড়ান্ত রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে মুফতি হান্নানের রিভিউ আবেদন খারিজ করে রোববার (১৯ মার্চ) সংক্ষিপ্ত রায়টি দেন সর্বোচ্চ আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দু’জন হলেন- শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন।

হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ জানান, মঙ্গলবারের মধ্যেই রায়টি হাইকোর্ট হয়ে কারাগার ও বিচারিক আদালতে যাবে। হাতে পাওয়ার পর রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

তবে সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানাতে পারবেন তারা। এ আবেদন না জানালে বা তা প্রত্যাখ্যাত হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ফাঁসি কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর মুফতি হান্নানসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। রায়ে এ বিষয়ে আসামিদের আবেদন খারিজ ও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দাল আপিল না করায় তাদের দণ্ডও বহাল থাকে।

গত ১৮ জানুয়ারি ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। আপিল বিভাগের এ রায় যাওয়ার পর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত। গত ০৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছালে এ পরোয়ানা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পড়ে শোনানো হয়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেন মুফতি হান্নান ও বিপুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। আবেদনে ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাসের আরজি জানানো হয়।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়।

হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।

মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন।

প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ০৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ০৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ০৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

** ‘মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর সময়ের ব্যাপার’
** রিভিউ খারিজ, মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি বহাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।