ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আহসান উল্লাহ হত্যা

১১ জনকে খালাসের রায়ের স্থগিতাদেশ বাড়লো

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৬
১১ জনকে খালাসের রায়ের স্থগিতাদেশ বাড়লো

ঢাকা: গাজীপুরের জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের ১১ আসামিকে খালাস দেওয়ার রায়ের স্থগিতাদেশ আগামী রোববার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এ আদেশ দেন  প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আসামিপক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

গত ১৫ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায়ে ১১ জনকে খালাস দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ অন্য ছয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালতে দণ্ড পাওয়া জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক থাকায় তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।  

রায়ের ১১ জনকে খালাস দেওয়ার অংশের বিরুদ্ধে সোমবার (২০ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ২১ জুন শুনানি শেষে রায় স্থগিত করে আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।


বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া ওই ১১ আসামি হলেন- আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক),  খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসির সাজা কমেছে এবং বাকি একজনের আগের সাজাই বহাল রয়েছে।     

মারা যাওয়া দুই আসামির আপিলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।  

আর মামলাটির মোট ৩০ আসামির মধ্যে ২ জন বিচারিক আদালতেই খালাস পেয়েছিলেন।

চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ছয়জন হলেন- নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু (পলাতক), মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ এবং সোহাগ ওরফে সরু।    

মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন হলেন- মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু (পলাতক), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (পলাতক), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর (পলাতক), আবু সালাম ওরফে সালাম ও মশিউর রহমান ওরফে মশু (পলাতক)। যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামি হলেন নুরুল আমিন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অহিদুল ইসলাম টিপু পলাতক থাকায় তার সাজার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।

বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়ার পর মারা যাওয়ায় আল আমিন ও রতন ওরফে ছোট রতনের আপিলের নিষ্পত্তি করে দেন হাইকোর্ট।

৩০ আসামির বাকি দু’জন কবির হোসেন ও আবু হায়দার ওরফে মিরপুরইয়া বাবু বিচারিক আদালত থেকেই খালাস পেয়েছিলেন।

এ মামলায় নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দিয়েছিলেন গাজীপুরের বিচারিক আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ২৮ জনের মধ্যে ২ জন মারা যাওয়ায় তাদের আপিলের নিষ্পত্তি করে ২৬ জনের বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।  

২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এ মামলায় ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ জন এবং আসামিপক্ষে দু’জন সাক্ষ্য দেন।

এরপর বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দেন।

পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়।

গত ২১ জানুয়ারি থেকে ০৮ জুন পর্যন্ত এ আপিল মামলার চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।