ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৭

আইন ও আদালত

আন্দোলনের সময় হাসিনাকে ‘জঙ্গি কার্ড’ খেলার কথা বলেছিলেন ইনু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৫৭, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫
আন্দোলনের সময় হাসিনাকে ‘জঙ্গি কার্ড’ খেলার কথা বলেছিলেন ইনু

জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ তিনজনের চারটি ফোনালাপ উপস্থাপন করা হয়েছে।  

এ চারটি ফোনালাপ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৫৩তম সাক্ষী উপস্থাপনের সময় বাজিয়ে শোনানো হয়েছে।

যেটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে জাসদ সভাপতির সঙ্গে শেখ হাসিনার দুটি ফোনালাপ তুলে ধরা হলো।  

হাসানুল হক ইনুঃ হালো জি জি স্লামালাইকুম ।
শেখ হাসিনাঃ হ্যাঁ ওয়ালাইকুমস্লাম কী হইছে?
হাসানুল হক ইনুঃ ইনু বলছিলাম...না একটা কথা... আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে, এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট
বাংলাদেশে পাচ্ছি আরকি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং ....
শেখ হাসিনাঃ না রামপুরা ক্লিয়ার, শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখন আছে... 
হাসানুল হক ইনুঃ শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই ....
শেখ হাসিনাঃ হ্যাঁ জানি, না, খালি মোল্লা না ওইখানে অনেক মাদ্রাসা।
হাসানুল হক ইনুঃ মাদ্রাসা আছে ওই....
শেখ হাসিনাঃ ....ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে...মাইকিং করতে হচ্ছে আরকি... নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে আমরা... নামাচ্ছি।
হাসানুল হক ইনুঃ ও আচ্ছা.....
শেখ হাসিনাঃ না আমি বলছি ক্যাজুয়াল্টির দরকার নাই, ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিকাছে, আকাশ থেকে নামবে, তখন দুইপাশ দিয়ে ধরবে... মেসেজটা দিয়ে দিতে পারেন যে... সেনা পাঠানো হচ্ছে... আর হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে...র‍্যাব এর হেলিকপ্টার
দিয়ে ওপর দিয়ে মারবে।
হাসানুল হক ইনুঃ আচ্ছা ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আরকি, ঠিকাছে... আমি একটা পয়েন্ট আপনাকে একটু নজরে আনার জন্য রিকোয়েস্ট করতেছি যে, কারফিউ ধরেন দুই-পাঁচদিন যা চল্লো চল্লো, কিন্তু কারফিউয়ের পরে যাতে আর মিছিল না নামতে পারে সেই জন্য একটা হোমওয়ার্ক করতে, করা দরকার যেরকম আমি উত্তরা, বাড্ডা, গুলশান, যাত্রাবাড়ীতে যারা মিছিল লিড করছে সেইগুলা চিহ্নিত .... ছাত্রদল, বিএনপির ছেলেমেয়ে ছেলেরা, শিবিরের ... মানে ধরেন রিজভীকে অ্যারেস্ট করা বা রুহুলকে অ্যারেস্ট করা ইম্পর্টেন্ট না, ইম্পর্টেন্ট হচ্ছে ওইখানে গ্রাউন্ডে যে মিছিলটা লিড করেছে, আমি কুষ্টিয়া জেলাতে এসপি সেইভাবে অলরেডি তালিকা করে ফেলছে। ওখানে কোনো সংঘর্ষ হয়নি, একটা ছররা গুলিতে খালি একজনের পায়ে লাগছে, উনি ম্যানেজ করছে। ম্যানেজ করছে। উনি অলরেডি কম্পিউটারে ছবি দেখে দেখে ছেলেগুলার তালিকা করতেছে। তা আমি বললাম যে ছেলেগুলাকে আজকে রাতের ভেতরে পিকআপ করে নাও ।  
শেখ হাসিনাঃ হ্যাঁ শিওর।
হাসানুল হক ইনুঃ যাতে মিছিলটা লিড না করতে পারে। তা আমি ঢাকা শহরের জন্য বলছি যে আপনার গোয়েন্দারা নিশ্চয়ই তালিকা করতে পারবে যে উত্তরায় কারা।
শেখ হাসিনাঃ ...খালি গোয়েন্দারটা না, লোকাল লিডারদেরও করা উচিত।
হাসানুল হক ইনুঃ লোকাল লিডার ওইখানে এমপি খসরু আছে এবং হাসান হাবিব আছে, আমার কালকের যে রিপোর্ট হাসান হাবিব... ও রাগ করে খসরুর ওপরে ছেড়ে দিছে যে এমপি সাহেব মোকাবিলা করুক
শেখ হাসিনাঃ খসরু তো পারবে না, খসরু ভো লোকাল না, হাসান তো লোকাল, ওদেরতো লোকজন আছে।
হাসানুল হক ইনুঃ লোকাল না তো হ্যাঁ রাইট, হাসান হাবিব নামেনি, আর এইখানে ওয়াকিলও সামলাইতে পারেনি, ও দুই লাইনে পা দিয়ে চলে। তো আমার কথা হচ্ছে যে একটু লোকাল লিডারদের সাহায্যে তালিকাটা করে নিয়ে আজকের রাতের ভেতরে সব কাস্টডিতে নিতে পারেন তাহলে কোন জায়গায় আর মোহাম্মদপুরে একটা পাঁয়তারা ছিল কালকে আপনি রাত ১২টায় যেয়ে খুব ভালো করছেন। আজকে কিন্তু গণভবন ঘেরাও করতো কিন্তু। মোহাম্মদপুরে ওইখান থেকে রেডি হচ্ছিল কালকে, মানে এইটা, সুতরাং...
শেখ হাসিনাঃ হ্যাঁ এইটা কয়েকদিন ধরে করতেছে।
হাসানুল হক ইনুঃ ডিসিশনটা খুবই কারেক্ট হইছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনাঃ থ্যাংকউ, থ্যাংকউ.... হলো রণক্ষেত্রের সাথী।
হাসানুল হক ইনুঃ রণক্ষেত্রের সাথী। তা আপনি একটু দয়া করে...এই পিকআপটা করতে বলেন...
শেখ হাসিনাঃ না এইটা বলা আছে, বলতেছি, বলতেছি।
"
হাসানুল হক ইনুঃ ওইটা একটু হোমওয়ার্ক করতে বলেন, করে অ্যারেস্ট করে ফেলতে বলেন আজকে। মানে সবই অ্যারেস্ট করে ফেললে আর মিছিল করার লোক থাকবে না।
শেখ হাসিনাঃ লিসেন, দাঁড়ান, দাঁড়ান। অ্যারেস্ট করে....
হাসানুল হক ইনুঃ আরেকটা রিকোয়েস্ট আমার যে ইন্টারনেট আমার মনে হয় চালু করতে পারেন, এটা আমাদেরই কাজে লাগবে।
শেখ হাসিনাঃ ভাই কি যে চালু করবো সবতো পোড়াই দিছে। ডাটা সেন্টারও পোড়ায় দিছেই পোড়ায় দিছে, এখন ওই নতুন তারতুর কিনে জোড়া লাগাতে হবে।
হাসানুল হক ইনুঃ ...আমি যে কথাটা বলার চেষ্টা...আমি একাত্তরে রাত আটটার সময় যাবো একা কথা বলবো। আমি বলবো যে সরকারের সাথে কোটা আন্দোলনকারীর কোনো বিরোধ নাই। সরকারের সাথে বিরোধ হচ্ছে নাশকতাকারী বিএনপি, জামায়াতের।
শেখ হাসিনাঃ না ওইটা তো বলা হয়েছে। ওইটা আমি নিজেও বলছি...
হাসানুল হক ইনুঃ ... এই জিনিসটা প্রোপাগান্ডায় আনতে হবে যদি ইন্টারনেট থাকে, গণমাধ্যম দিয়ে আমরা পুরা নিউজে ফ্লাড করে দিলাম.... 
শেখ হাসিনাঃ ইন্টারনেট পাবো কোথায়? ইন্টারনেট পোড়ায় দিছে। জীবনে...আমি তো আর আনবো না, যদি অন্য সরকার আসে তাহলে আনবে... আমি দিছি ইন্টারনেট, ওরা পোড়াইতে থাকুক, ওইটা চলতে হবে.....
হাসানুল হক ইনুঃ অন্য সরকার, বাংলাদেশে ইনশাআল্লাহ অন্য সরকার আসবে না।
শেখ হাসিনাঃ আসুক, না আমি আর পারবো না.. যাচ্ছি এখন
হাসানুল হক ইনুঃ না না...যাওয়া দরকার নাই
শেখ হাসিনাঃ জামায়াত শায়েস্তা করে থুয়ে যেতে হবে
হাসানুল হক ইনুঃ ....
শেখ হাসিনাঃ ...আপনার যেখানে যেখানে লোক আছে তালিকাগুলি আপনারা করান, আমরাও করাচ্ছি।
হাসানুল হক ইনুঃ ...আপনি এই... জামায়াত-শিবিরের মেরুদণ্ডটা আবার ভেঙে দেন ঢাকা শহরে।
শেখ হাসিনাঃ একেবারে...
হাসানুল হক ইনুঃ... এক্সপোজ হইছে আরকি, একটু দেখেন, আর আমি বাদবাকি আমাকে যেটা বলবেন আমি ইনশাআল্লাহ করবো, কোনো অসুবিধা নাই ।
শেখ হাসিনাঃ না ওই তালিকাগুলি একটু করায় ফালান...এই ছুতায় যা পারেন, শিবির যে কয়টা আছে, যা আছে সব বের করেন ... 
হাসানুল হক ইনুঃ বুচ্ছি আমি বুচ্ছি। জি স্লামুয়ালাইকুম
শেখ হাসিনাঃ ঠিকাছে আচ্ছা।
হাসানুল হক ইনুঃ জি স্লামুয়ালাইকুম
শেখ হাসিনাঃ থ্যাংকউ, থাংক ইউ...

শেখ হাসিনাঃ হ্যালো?
হাসানুল হক ইনুঃ হ্যালো জি স্লামালাইকুম। আমি ইনু বলছিলাম। হ্যালো...
শেখ হাসিনাঃ হ্যাঁ বলেন।
হাসানুল হক ইনুঃ জি, না আমি একটু পরিস্থিতি অনুযায়ী একটু উদ্বেগের ভেতরে ছিলাম। তো আমি মনে করি যে সিদ্ধান্তটা খুব সঠিক হয়েছে আরকি। তো আমি যেটা বলতে চাচ্ছিলাম যে কারফিউটা একটু কঠোর কারফিউ আরকি ভাবে, তো সারা ঢাকা শহরে যদি মাইক নামায়ে দিতো প্রশাসন থেকে কারফিউ কি করা উচিত না... তাহলে একটু সুবিধা হতো মনে হয়।

শেখ হাসিনাঃ আমি হোম মিনিস্টারকে বলছি এখনি, সব জায়গায় মাইকিং করার জন্য..চারজন আহত...জেলায় জেলায় ডিসি অফিস... 
হাসানুল হক ইনুঃ হ্যাঁ ওইগুলা সব পেয়েছি আমি, ডিসি অফিস, এসপি অফিস, আওয়ামীলীগের বাড়ি, আওয়ামীলীগ অফিস, এইগুলার প্রত্যেকের লিস্ট আমি পেয়েছি.....
শেখ হাসিনাঃ আমি এখন ঢাকায় আসবো।
হাসানুল হক ইনুঃ আচ্ছা তো এখন আমার কথা হচ্ছে যে কারফিউটা মানে এমন হবে যে ঘর থেকে বের হলেই অ্যারেস্ট করবে, গুলি হবে না, সেটা আপনার আমার ভেতরে, গুলি নাই কিন্তু সেনাবাহিনীর ভাবটা এমন হবে, কঠোর মানে কঠোর একেবারে। তো সেইজন্য... 

শেখ হাসিনাঃ আজকে আমি, সত্যি কথা বলতে কি, বলি আপনাকে। আমি... কমিটি আছে তো...মিটিং করছিলাম, করার আগেই আমি দিছি... তিন বাহিনীর প্রধানের সাথে বসছিলাম....
হাসানুল হক ইনুঃ এটা দেখছি
শেখ হাসিনাঃ বললাম যে একটু সিচুয়েশনটা একটু ভালো হচ্ছে। তাহলে আস্তে আস্তে আর্মি, যেসব জেলা শান্ত আছে, ওইখান থেকে উঠায় ফেলো আর এইখানে আস্তে আস্তে গ্র্যাজুয়ালি তুলে ফেলো। এই ডিসিশনটা দিয়ে দিছি৷
হাসানুল হক ইনুঃ আচ্ছা।
শেখ হাসিনাঃ মানুষ একটু ইয়ে থাকুক। ওমা, ওইখানে বসা অবস্থায় শুনলাম যে, শুরু হয়ে গেছে।
হাসানুল হক ইনুঃ ওতো টার্গেটেড। উপজেলা লেভেলেরও ইউএনও অফিস ভাঙচুর করছে...
শেখ হাসিনাঃ .... পরিনাম শুনলাম তখন আমি বললাম যে ঠিকাছে....তোমরা বলো কী করবা...কারফিউটা আগায় দিচ্ছে আর কি পয়েন্টগুলি যেগুলি ওদের কতগুলি জায়গা ওরা সিলেক্ট করছে যেখানে হামলা করবে...ভার প্রটেকশন দেবে আর... র‍্যাব, পুলিশ টহল দেবে আর সেনাবাহিনীর অবশিষ্টর মধ্যে...যেখানে যেখানে প্রয়োজন হয় তোমরা টহল দেবো। যেটা বলছো ওইটা ঠিক.... ওই প্রেসারটা থাকতে হবে।  

হাসানুল হক ইনুঃ প্রেসারটা থাকতে হবে, মানে প্রেসারটা থাকতে হবে, আরেকটা হচ্ছে যেটা কালকে আলাপ করছিলাম যে আপনার পার্টি নেটওয়ার্কে আমাদের পার্টি নেটওয়ার্কে ... রেডি করা যে কারফিউ উঠে গেলে এক লাখ লোক ঢাকা দখল করবো আমরা। বসবো।  

শেখ হাসিনাঃ ... ওরা জেলায় আসবে, আমাদেরও জেলা থেকে লোক আসতে চাচ্ছে... বলছি ঠিকাছে আসেন।  
হাসানুল হক ইনুঃ হ্যাঁ এটা আনা দরকার আমি মনে করি, এটা কারেক্ট
শেখ হাসিনাঃ না আসুক...
হাসানুল হক ইনুঃ আমি কালকে বলছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে শহীদ মিনার, শাহবাগ চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে, প্রেসক্লাবের সামনে, পল্টনে ...
শেখ হাসিনাঃ ... আমাদের নিয়ে নিতে হবে
হাসানুল হক ইনুঃ এটা আমরা নেবো, আমরা বসবো এইখানে এবং কারফিউ যেদিন রিলাক্স হবে সেদিনই মিছিলের নগরী হয়ে যাবে একেবারে। এবং কিছুই না, শান্তি চাই, শাস্তি চাই, ছাত্ররা বাড়ি যাও, ফেরত যাও, ফেরত যাও, সন্ত্রাস দমন করো...
শেখ হাসিনাঃ আচ্ছা আমি এটা কলে দিতে বলছি। যে তোমরা ছাত্ররা সব ঘরে ফেরো। গার্ডিয়েনদের বলছি এইখানে কিন্তু জঙ্গি হামলা হইছে।

হাসানুল হক ইনুঃ হ্যাঁ রাইট রাইট।
শেখ হাসিনাঃ না এইটা আমাকে ... বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইয়ে পাইছি। তারা এইটাকে জঙ্গি হামলা হিসেবে কনসিডার মানে বলতেছে।  

হাসানুল হক ইনুঃ হ্যাঁ, জঙ্গি হামলাই হইছে...এই কার্ডটা খেলবো আমরা এখন।

শেখ হাসিনাঃ না কার্ড খেলা না, এটা আমি আগে করি নাই কিন্তু আমাকে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে আমাকে মেসেজটা দিছে যে এটা জঙ্গি হামলা...
হাসানুল হক ইনুঃ জঙ্গি সন্ত্রাসের মোকাবিলা করছে এখন সরকার ।
শেখ হাসিনাঃ ...তারা আমাকে এইটাই বলছে যে এইটা জঙ্গি হামলা... দিয়ে দেবো পেপারে ।
হাসানুল হক ইনুঃ আচ্ছা এইটা একটা ব্যাপার, আরেকটা হচ্ছে যে, দুইটা ভাগ, একটা হচ্ছে ছাত্রদের কোটা আন্দোলনকারী, একটা হচ্ছে উৎখাতকারী, উৎখাতকারীরা জঙ্গি সন্ত্রাসী হামলায় চলে গিয়েছে। কোটা সংস্কারকারীর ব্যাপারে আপনার আমার সরকারের যা যা আছি সমবেদনা আছে। উৎখাতকারীকে আমি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো, কোনো ছাত্র যদি উৎখাতকারীর সঙ্গে জড়িত হয়, সেই দায়িত্ব আমি নেবো না।
শেখ হাসিনাঃ ...এটা আপনারা বলেন, এটা আপনারা বলেন না কেনো?
হাসানুল হক ইনুঃ আমি তো বলবো...
শেখ হাসিনাঃ আরে আমি তো ক্র, আপনারা বললে তখন মনে করবে যে অন্যান্য এঙ্গেল থেকে বলা হইছে।
হাসানুল হক ইনুঃ আমি ভো অবশ্যই বলবো.....
শেখ হাসিনাঃ বাকি দেখতেছিনা, কমিউনিস্ট পার্টি তারা এখন শেষ হয়ে গেছে...
হাসানুল হক ইনুঃ তো দেখি আমি ওদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি সেলিম সবার সঙ্গে।
শেখ হাসিনাঃ ...কি জানি উনার নাম? সাইফুল হক নাকি?
হাসানুল হক ইনুঃ সাইফুল সাইফুল। জোনায়েদ সাকি। জোনায়েদ সাকি, সাইফুল হক। আচ্ছা আমি জোনায়েদ সাকি, সাইফুল হকের সাথে একটু লিয়াজোঁ করি।
শেখ হাসিনাঃ তোমরা কোথায় নিচ্ছো দেশটাকে? ওদের মধ্যে যে সমর্থন দিচ্ছো তা এখন দেখো পুরা জঙ্গি হামলা হচ্ছে।  
হাসানুল হক ইনুঃ আরেকটা পয়েন্ট কি খেয়াল করছেন আপনি যে আনু মুহাম্মদেররা সরি শিক্ষকরা যারা সমর্থন দিছে তারা একটা অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা ... করার চেষ্টা করছে যেখানে বলতে চাচ্ছে যে অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষার্থীদের নিয়ে হেন-তেন নিয়ে হবে, ছায়া সরকার করবে এবং সংবিধান বাতিল করার জন্য একটা সংবিধান সভা করতে হবে। মানে সংবিধানই বাতিল করে দেবে...হ্যাঁ সংবিধান বাতিল চায়। আমি....ভাইকে একটু আগে বলছি যে মাইনুল ভাই এটা খুবই অ্যালার্মিং কথা, যেখানে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি আর ম্যুরাল ভেঙে ফেলতেছে তার মানে আমার পয়েন্টটা নিতে হবে যে এদের এট্যাকটা হচ্ছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের বেসিক অর্জনের উপরে। সুতরাং তারা তো বালি সরকার বদল চাচ্ছে না, মানে কোটা আন্দোলন করে কোটা চায়নি তারা সরকার উৎখাত করতে চাইছে। আর এক দফা আন্দোলনের মানে তারা হচ্ছে সরকারের মানে রাষ্ট্রের বেসিক সংবিধান উড়ায় দিচ্ছে চাচ্ছে তারা। তারমানে এই জায়গায় পলিটিক্সটা এট্যাক করতে হবে আমাকে, দাঁড় করাইতে হবে এখন।
শেখ হাসিনাঃ ওই যে সেভেনটি ফাইভের পর করছিল..... 
হাসানুল হক ইনুঃ এক্সাক্টলি, তো এখন আপনি কি অ্যাডজাস্ট করবেন এইটা ছোটোখাটো পাঁচ-দশ মিনিটের...আরও দুই-একদিন পরে?

শেখ হাসিনাঃ আজকের দিনটা যাক দেখি ।
হাসানুল হক ইনুঃ আজকের দিনটা যাক, আমি প্ল্যানগুলা সাজাই আপনাকে আমি আমার বিবেচনা যেগুলা আছে দিবোনি আপনাকে। আর আমি বলি যে কারফিউটা বডি ল্যাংগুয়েজে অনেক কঠোর হবে যে ঘর থেকে বের হলেই অ্যারেস্ট গুলি না মানে অ্যারেস্ট করে ভেসে আসবে মানে টেলিভিশনে যে শান্তিনিকেতন থেকে ৩০জন অ্যারেস্ট হইছে, জেলে পাঠানো হইছে, কিন্তু জেলে পাঠাবো না, থানায় রাখবো, ১০ ঘণ্টা পরে ছেড়ে দেবেন আরকি। বুঝলেন না?
শেখ হাসিনাঃ বেশ, আচ্ছা।
হাসানুল হক ইনুঃ গরিব মানুষই তো। কিন্তু প্রোপাগান্ডা হবে ঘর থেকে বেরোলেই, মানে গুলি হবে, গুলি শব্দ বলবো না, আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে কঠোর। কেউ ঘরের বাইরে বেরোবে না। মানে রিল্যাক্স কারফিউ না আরকি। আপনার অফিসের মানে বাসার চারপাশে একটু মানে এই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর এখান থেকে প্রোটেকশন বাড়ান.....
শেখ হাসিনাঃ ...
হাসানুল হক ইনুঃ না ওইটা না, ওরা যে ঢাকা চলো বলছে, গণভবন আক্রমণ করবে এইগুলা বলছে...
শেখ হাসিনাঃ গণভবন, বঙ্গভবন সব আক্রমণ করবে....

হাসানুল হক ইনুঃ তা ঠিক আছে, আল্লাহ ভরসা। আমি, আমার কথা হচ্ছে যে আমাদের পরে যে জনতার ঢাকা এইটা প্রমাণ করার জন্যে হোমওয়ার্কটাই আজকের ২৪ ঘণ্টায় করে ফেলতে হবে। এভরি ওয়ার্ডে থেকে দুই হাজার লোক রেডি করতে হবে। এভরি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুই হাজার রেডি করতে হবে এবং জেলাগুলোতেও আমি আমার যত নেটওয়ার্ক আছে আমি বলছি কারফিউ উঠবে, সাথে সাথে মিছিল বের হবে কুষ্টিয়া শহরে তিন হাজার লোকের পাঁচ হাজার লোকের, রংপুর শহরে, ময়মনসিংহ শহরে, মানে শাস্তি চাই, সংঘাত চাই না, শান্তি চাই, শান্তি চাই, ছাত্ররা ঘরে ফেরত যাও। এই মিলি দখল করে নিতে হবে।

শেখ হাসিনাঃ ঠিকাছে, আপনারা আগে বলেন যে ছাত্ররা পরে যাও।
হাসানুল হক ইনুঃ আমিও বলতেছি, আমি অবশ্যই বলবে। কিন্তু আপনার পার্টিটাকে একটু চাঙা করেন।
শেখ হাসিনাঃ আমি ক্রনে দিয়ে দিছে দেখেন এখন চলে আসছে।
হাসানুল হক ইনুঃ আচ্ছা ঠিকাছে ওকে। ঠিকাছে।
শেখ হাসিনাঃ ঠিকাছে। আচ্ছা।

এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপ-পরিচালক মো. আলমগীর (পিপিএম)। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।

এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।

গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।  

ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।