ঢাকা, বুধবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩২, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

আইন ও আদালত

মিসরের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সমঝোতা স্মারক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৩, অক্টোবর ৭, ২০২৫
মিসরের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সমঝোতা স্মারক

সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে পারস্পরিক বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা সংক্রান্ত ‘জুডিসিয়াল কো-অপারেশন প্রটোকল বিটুইন দ্য সুপ্রিম কনস্টিটিউশনাল কোর্ট অব আরব রিপাবলিক অব ইজিপ্ট অ্যান্ড দ্য সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক (প্রটোকল) সই হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

 

সুপ্রিম কোর্ট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রিফাত আহমেদ বর্তমানে সুপ্রিম কনস্টিটিউশনাল কোর্ট অব আরব রিপাবলিক অব ইজিপ্টের সভাপতি বিচারপতি বুলোস ফাহমির আমন্ত্রণে মিসর অবস্থান করছেন।  

এ সফরের অংশ হিসেবে প্রধান বিচারপতি মঙ্গলবার বিচারপতি বুলোস ফাহমির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

সভায় উভয় দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিচার প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে দুই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে পারস্পরিক বিচারবিভাগীয় সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়, যা দুই দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রটোকলে বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ এবং কারিগরি সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।  

এ সময় মিসর সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারক এবং কায়রোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।  

স্বাক্ষরিত প্রটোকলে উভয় দেশের সাংবিধানিক, আইনি ও বিচারিক সহযোগিতা বাড়াতে পারস্পরিক অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। প্রটোকলে উভয় দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার উন্নয়ন, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থার দক্ষতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  

এ ছাড়া প্রটোকলে প্রশিক্ষণ, গবেষণা, সেমিনার আয়োজন এবং বিচারিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়কে পারস্পরিক সহযোগিতার মূল ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে।

স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুযায়ী উভয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত বিভিন্ন বিষয়ে যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করবে এবং এর পাশাপাশি আইনের কোন বিশেষ শাখায় বিশেষজ্ঞ কোন আইনবিদের মাধ্যমে জ্ঞান বিনিময়সহ পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়ে যৌথ গবেষণা পরিচালনা করবে। এ ছাড়া প্রটোকলে উল্লেখ রয়েছে যে উভয় দেশের বিচার বিভাগ সম্মেলন, সেমিনার ও পারস্পরিক সফরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিবেচিত শ্রেষ্ঠ বিচারিক চর্চা ও বিচারিক উদ্ভাবন বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সহযোগিতা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে উভয় দেশ লিয়াজোঁ অফিসার নিয়োগ করবে মর্মে প্রটোকলে উল্লেখ রয়েছে, যারা এই প্রটোকল বাস্তবায়নে কার্যক্রম সমন্বয় ও যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

এই প্রটোকল স্বাক্ষর উভয় দেশের বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও বিচারিক উৎকর্ষের প্রতি অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। প্রটোকলটি বাংলাদেশ ও মিসরের বিচার বিভাগের মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা, এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের নতুন পথ উন্মুক্ত করবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি আধুনিক বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় এটি বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।  

 সফর শেষে প্রধান বিচারপতি ১১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।

ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।