ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

রমজানের প্রস্তুতি নিন এখনই

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৫
রমজানের প্রস্তুতি নিন এখনই

বছর ঘুরে আবারও মাহে রমজান সমাগত। চারদিকে প্রস্তুতি চলছে।

কারও কারও সেই পর্ব শেষের দিকে, এখন অপেক্ষা কেবলই রমজান আসার। মহানবী (সা.) রজব মাসের শুরু থেকেই রমজানের প্রস্তুতিস্বরূপ নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতেন—

‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাজান। ’

অর্থ: হে আল্লাহ! রজব ও শাবানকে আমাদের জন্য বরকতময় কর এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত দীর্ঘ কর।

মাহে রমজান মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে উম্মতে মুহাম্মদির জন্য বিশেষ উপহার। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, তার প্রথম অংশ রহমত, মধ্যমাংশ মাগফিরাত এবং শেষাংশ দোজখ থেকে মুক্তির। এ মাস আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত, মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রাপ্তির, তার সান্নিধ্য হাসিলের। রমজানে প্রতিটি নেক আমলের বিনিময় ন্যূনতম দশগুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়, বিতাড়িত শয়তানকে জিঞ্জিরাবদ্ধ করা হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। রমজানে আমলের বিশেষ পরিবেশ তৈরি করা হয়; মুসলমানদের ক্ষমার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাই সুবর্ণ এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাকে সফল করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া কাম্য।

মাহে রমজান উপলক্ষে সর্বপ্রথম মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। আমি অমূল্য এ মাসকে কীভাবে কাটাব? অন্য সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত কী করব? স্বাভাবিক আমলের অতিরিক্ত আমার আর কী আমল হবে, সে লক্ষ্য এখন থেকে নেয়া প্রয়োজন। আপনার লক্ষ্য আপনাকে তাড়া করে বেড়াবে। রমজানেও অন্যান্য সময়ের মতো কাজ-কর্ম থাকাই স্বাভাবিক, সেক্ষেত্রে যেসব কাজ আগে-পরে করা বা বাদ দেয়া যায় তা আগেভাগেই চিন্তা করে সেভাবে ব্যবস্থা নিয়ে রমজানে আপন কর্মপরিকল্পনা এভাবে নেয়া দরকার যেন ইবাদতের ভরবসন্তে বেশি সময় ইবাদতেই কাটে।

উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) রমজানে ইবাদতের জন্য কোমর বেঁধে লেগে যেতেন।

রমজানে ইবাদতের পরিবেশ তৈরি করা এবং রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া তার প্রস্তুতিরই অপরিহার্য অংশ। ব্যক্তিপর্যায় থেকে নিয়ে পারিবারিক, সামাজিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে রমজান উপলক্ষে গণসচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি।

সম্প্রতি বিশ্বের অনেক জায়গায় রমজানের আগে গণসচেতনতার জন্য সেমিনার, র্যালি এবং ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশেও এসব হয়, তবে এর পরিধি আরও বাড়ানো যেতে পারে। রমজানকে সামনে রেখে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার, তার পবিত্রতা রক্ষার প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা ফলপ্রসূ হবে নিশ্চয়। রমজান উপলক্ষে অনেক মিডিয়াই বিশেষ আয়োজন করে থাকে। বহু ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সাহরি ও ইফতার অনুষ্ঠান করে থাকে। কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া বিশেষ পাতা বা দৈনিক কলামের ব্যবস্থা করে। এজন্য তারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য নিঃসন্দেহে।

আসন্ন রমজানে দেশের শীর্ষ নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ‘অপার মহিমার রমজান’ শিরোনামে বিশেষ আয়োজনের ঢালি নিয়ে পাঠকের সামনে আসছে।

এ অায়োজনে থাকবে, সেহরি-ইফতারের সময়সূচি, প্রতিদিনকার দোয়া, প্রয়োজনীয় মাসয়ালা-মাসায়েলসহ প্রবন্ধ-নিবন্ধ। বাংলানিউজের অায়োজনে আরও থাকবে, প্রতিদিন তারাবির নামাজে তেলাওয়াতকৃত কোরআনের সূরা ও আয়াতাংশের তাফসির, শিক্ষা, ঐতিহাসিক ঘটনা ও বিধানাবলী।

থাকছে দেশের সাত বিভাগের শীর্ষ মুফতি ও খতিবদের সাক্ষাৎকারভিত্তিক দিক-নির্দেশনামূলক লেখা। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রমজান পালনের বৈচিত্রময় খবরও জানতে পারবেন এই আয়োজনে। আরও থাকবে প্রশ্নোত্তর পর্ব। উত্তর দেবেন দেশের স্বনামধন্য মুফতিরা।

এছাড়া রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা জরুরি। সরাসরি নিজে গুনাহ করা কিংবা অন্যকে গুনাহের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া সমান অপরাধ। হোটেল ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে সমান গুনাহগার হবেন। দিনের বেলায় হোটেল বন্ধের কারণে হয়তো তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তবে স্মরণ রাখতে হবে আল্লাহতায়ালা বরকত দিলে সে ক্ষতি পুষিয়ে যেতে পারে, আর তার পক্ষ থেকে বে-বরকতি হলে বহুগুণ লাভ করেও হয়তোবা ক্ষতির পাল্লাই ভারী হবে। মুমিনদের অন্তরে এ বিশ্বাস বদ্ধমূল থাকা অপরিহার্য। তাই এ বিশ্বাস অনুপাতে আমল ঈমানের দাবি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘন্টা, জুন ১৬, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।