ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের হেফাজত করো

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫
হে আল্লাহ! তুমি আমাদের হেফাজত করো

রাজনৈতিক ‍অস্থিরতার কারণে প্রতিনিয়ত অপ্রত্যাশিত কিছু বিপদে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। এর অন্যতম হলো, চলন্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ।

পক্ষকালব্যাপী এই সমূহ বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে মানুষকে। জীবনের প্রয়োজনে চলাচল যেমন প্রয়োজন, তেমনি বিপদমুক্ত জীবনও কাম্য। সৃষ্টিগতভাবে মানুষ বিপদমুক্ত জীবন কাটাতে চায়। তাই চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে। ক্ষেত্রবিশেষ এই বাড়তি সতর্কতা কাজে লাগে, অনেক সময় কাজে লাগে না। আমরা জানি, দুনিয়ায় কিছু বিপদ আপতিত হয় প্রাকৃতিকভাবে, আর কিছু বিপদ আসে মানুষের কারণে। বস্তুত বিপদ কোনো সময়ই বলে-কয়ে আসে না।

যে কোনো বিপদে আমরা আল্লাহকে স্মরণ করি; তার সাহায্য কামনা করি। শুধুমাত্র  বিপদ-আপদে আল্লাহর স্মরণ নয়। প্রয়োজন সবর্দা মনে আল্লাহর ভয়কে জাগ্রত রাখা। বিপদ যেমন দেখা যায় না, কোনো পূবার্ভাস দেয় না- তেমনি মৃত্যু কখন আসবে তাও বলা যায় না। যার মনে এই ভাবনা বিরাজমান, সে কখনও  কোনো অন্যায় কাজে জড়াবে না। শান্তিময় পরিবেশ অশান্ত করে তুলবে না- এটুকু হলেও অন্তত আমরা মানুষ দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয়  বিপদ থেকে রক্ষা পাব।

সে হিসেবে বলা যায়, শুধু বিপদকালে আল্লাহর স্মরণ নয়, সর্বাবস্থায় তাকে স্মরণে রাখা। এটা অন্তত শান্তিপূর্ণ অবস্থায় কৃতজ্ঞতার জন্য হলেও জরুরি।   মানুষের সর্বদা এটা মনে রাখা দরকার, বিপদের সময় যিনি সাহায্য করতে পারেন, তিনি বিপদ যেন না হয়, সেই  ব্যবস্থাও করতে পারেন।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তার চাচাতো ভাই হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) কে নসিহত করেছিলেন, ‘হে খোকা!  আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দেব। আল্লাহকে হেফাজত করো, আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে হেফাজত করো, তুমি তাকে সামনে পাবে। যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। যখন সাহায্য কামনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাবে। জেনে রেখ!  পুরো জাতি যদি তোমাকে উপকার করতে একত্র হয় তবুও তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না। তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা লিখে রেখেছেন। এমনিভাবে পুরো জাতি যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্র হয়, তবুও তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তবে আল্লাহ যা তোমার বিপক্ষে লিখে রেখেছেন। কলম উঁঠিয়ে নেওয়া হয়েছে আর দফতর শুকিয়ে গেছে। ’ –তিরমিজি

এ হাদিসে আল্লাহকে হেফাজত করো বলে বোঝানো হয়েছে যে, একমাত্র তার কাছেই চাও, তার কাছেই প্রার্থনা করো; তার সঙ্গে কারও শরিক করো না। জীবনচলার পথে কত ধরনের বিপদ আমাদের সামনে আসে। এসব থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সব ধরনের পাপের কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কোনো কাজ করা যাবে না। আর সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।   কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করতে হবে।

হে আল্লাহ!  তুমি আমাদের হেফাজত করো। তুমি আমাদের ওপর দয়া করো। হে আল্লাহ!  সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে তোমার রহমত ও দয়ার ছায়ায় ঢেকে নাও। হে আল্লাহ!  আমাদের যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করো। ওগো দয়াময়!  আমাদের তুমি নিরাপদে ও শান্তিতে রাখ। হে মাবুদ!  আমরা তোমার কাছে সব ধরনের রুক্ষ আচরণ, স্বভাব, পাপের কাজ ও অভ্যাস থেকে মুক্তি চাচ্ছি। অযাচিত লোভ, কঠোরতা, দুনিয়া ও খ্যাতিপ্রীতি থেকে মুক্তি চাচ্ছি। হে আল্লাহ!  তুমি আমাদের প্রার্থনা কবুল করো ও আমাদের হেফাজত করো। আমিন, ইয়া রাব্বাল আলামিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।