ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

‘নাগরিকত্ব বিল জাতিগত নিধনের অপচেষ্টা, সংবিধানবিরোধী’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
‘নাগরিকত্ব বিল জাতিগত নিধনের অপচেষ্টা, সংবিধানবিরোধী’ বিলটির প্রতিবাদে উত্তাল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়রা, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাঙালিবিরোধী; সাম্প্রদায়িক। দেশের সংবিধান বিরোধী। সংবিধানের ভিত্তির ওপর আঘাত করে বিলটি। এই বিল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ওপর আক্রমণ করে। এমনকি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এই বিল লোকসভায় পাস করা হয়েছে বলে মন্তব্যে সরব হয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সাবেক কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধী নিজের মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটে বলেন, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ সরকারের জাতিগতভাবে দেশের উত্তর-পূর্বকে নিধনের অপচেষ্টা।

তিনি বলেন, এটি উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা গোটা দেশের জীবনযাত্রার ওপর আঘাত করবে।

এই ধারণা একটি অপরাধমূলক আক্রমণ। উত্তর-পূর্বসহ গোটা দেশের জনগণের সঙ্গে আমিও সংহতি জানাই। তাদের সেবায় আমি আছি।

এদিকে, নির্ধারিত দিন বুধবার তুমুল বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যসভায় উঠেছে এই বিল। হবে এবার উচ্চকক্ষের ভোটাভুটি।

২৪৫ আসনের রাজ্যসভার পাঁচটি আসন এবার খালি। এ হিসেবে ২৪০ এর মধ্যে ১২১ আসন পেলেই সরকার পক্ষ পাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা। যদিও এর বিরোধীতা করবে বিরোধী শিবির। এরপরও বিজেপি সরকার ১৩১টি আসন পাবে বলে দলটি সম্ভাবনা পেয়েছে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর)।

লোকসভার পর এবার রাজ্যসভায়ও বিলটিকে পাস করাতে মরিয়া সরকার পক্ষ। যদিও এর আগে একবার বিলটি আটকে গিয়েছিল রাজ্যসভায়। যে কারণে সরকারের এই অনড় অবস্থান।

তবে সিএবি বিরোধীতায় রাজ্যসভায় সরব হয়েছেন তৃণমূলের দেরেক ও’ব্রায়েন। বিলটিকে বাঙালি ও সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশে সিএবি ও এনআরসি প্রয়োগ করতে দেওয়া হবে না বলে তিনি হুমকি দিয়েছেন।

রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সংসদ সদস্য আনন্দ শর্মা বলেন, এই বিল দেশের সংবিধানের ভিত্তির ওপর আঘাত করে। যে বিল আপনারা পেশ করেছেন, তা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ওপর আক্রমণ করে। বিলটি সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী। নৈতিকতার বিচারে এই বিল মেনে নেওয়া যায় না।

অবশ্য সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) লোকসভায় বিলটি উত্থপান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন বিজেপি প্রধান অমিত শাহ বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোতে বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘুর হার কমেছে। হতে পারে তারা নিহত বা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এ দেশে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের অবস্থা ভয়াবহ। এই বিলের ফলে এই লক্ষাধিক মানুষের সুবিধা হবে।

এসময় তিনি বিলটির ফলে ভারতীয় মুসলমানদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন।

বিলটিতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিষ্টান অবৈধ অভিবাসীদের যাতে সহজে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া যায়, এ হিসেবেই এ সংশোধনী।

আগের আইন অনুযায়ী ১২ বছর ভারতে থাকলে কেউ নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হতেন। সংশোধিত আইন অনুযায়ী সেই সময়সীমা কমিয়ে ছয় বছর করা হয়েছে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অধিকাংশকেই এই বিলের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ