ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

কে এই বাগদাদী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
কে এই বাগদাদী? আইএসের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদী মার্কিন সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সিরিয়ায় ইদলিব প্রদেশে মার্কিন বাহিনীর হামলার প্রেক্ষিতে বাগদাদী আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে তিন শিশুসন্তানসহ নিহত হন।

বাগদাদীর মৃত্যুর পর বিশ্ব গণমাধ্যমে নতুন করে তার নাম আবারও আলোচনায় এসেছে। এর আগেও বাগদাদীর মৃত্যুর খবর বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে ছড়িয়েছিল।

তবে, এবার তার ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিজে বাগদাদীর মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেছেন।

জানা যায়, আইএসের শীর্ষ নেতা বাগদাদীর আসল নাম নাম ইব্রাহিম আওয়াদ আল-বদরি। ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাগদাদী ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর কোরানিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ইঙ্গো-মার্কিন আক্রমণের শিকার হয়ে ক্যাম্প বুকাতে ২০০৪ সালে বন্দি হন বাগদাদী। সেখানে সাবেক ইরাকি গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ অন্য বন্দিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ২০০৩ সালে ইরাকে সামরিক অভিযান শুরুর সময় বাগদাদের একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন আল বাগদাদী। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তবে, কেউ কেউ মনে করেন, দক্ষিণ ইরাকে একটি মার্কিন সামরিক ক্যাম্পে চার বছর আটকে রাখার সময়ই বাগদাদী জঙ্গিবাদে দীক্ষা নেন। এই ক্যাম্পে অনেক আল কায়েদা কমান্ডারও বন্দি ছিলেন।

বাগদাদী একসময় ইরাকি আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরে অবশ্য ইরাকি আল কায়েদা নিজেদের ‘ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট’ বলে ঘোষণা করে ও ২০১০ সালে এর প্রধান হন বাগদাদী। এরপর ২০১৩ সালে ইরাকে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর গোড়াপত্তনের ঘোষণা দেন তিনি।  

আরও পড়ুন> তিন সন্তানসহ আইএস নেতা বাগদাদী নিহত: ট্রাম্প

২০১৪ সালে ইরাকের মসুলে আল নুরি মসজিদের সামনে এক ভিডিওতে বাগদাদীকে প্রথম দেখা যায়। এরপরই বাগদাদীর বিরুদ্ধে একযোগে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। তখন থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন এই জঙ্গিনেতা।

২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাগদাদীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এক কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে। ২০১৭ সালে পুরস্কারের পরিমাণ বাড়িয়ে আড়াই কোটি ডলার করা হয়।

চলতি বছরের এপ্রিলে আইএসের মিডিয়া উইং আল ফুরকানের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে একজনকে দেখে বাগদাদী বলে সন্দেহ হয় পেন্টাগনের।  

গণমাধ্যমে এর আগেও বেশ কয়েকবার বাগদাদীর মৃত্যুর খবর এসেছে। ২০১৭ সালের মে মাসে রাশিয়া দাবি করেছিল, রুশ বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বাগদাদী। সেসময় ইরানের গণমাধ্যমেও তার মৃত্যুর খবর ছাপানো হয়।  

তবে এরপরও আইএসের বিভিন্ন হামলায় বাগদাদীর নেতৃত্ব দাবি করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। তারা জানায়, আত্মগোপনে থেকেই তাদের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।  

সবশেষ, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল, মার্কিন বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাগদাদী।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
টিআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।