ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধে ধর্ষণ বন্ধে লড়াই এনে দিলো শান্তিতে নোবেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৮
যুদ্ধে ধর্ষণ বন্ধে লড়াই এনে দিলো শান্তিতে নোবেল ডেনিস মুকওয়েগে ও নাদিয়া মুরাদ

ঢাকা: যুদ্ধে যৌন-সন্ত্রাস বন্ধে প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে এবার শান্তিতে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুকওয়েগে এবং ইরাকের ইয়াজিদি মানবাধিকারকর্মী নাদিয়া মুরাদ।

শুক্রবার (৫ অক্টোবর) ওসলোতে স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) সংবাদ সম্মেলনে বিজয়ী দু’জনের নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।

তাদের পুরস্কার দেওয়ার কথা জানিয়ে বলা হয়, যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘাতে যৌন সহিংসতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধে অনন্য প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ডেনিস মুকওয়েগে ও নাদিয়া মুরাদকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।

পুরস্কার হিসেবে একটি করে সোনার মেডেল পাবেন দু’জনে। সেই সঙ্গে পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ভাগ করে নেবেন তারা। আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে জানান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিত রিইস-এন্ডারসন।

২৫ বছর বয়সী নাদিয়া মুরাদ ইরাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হাতে নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়েছিলেন। ২০১৪ সালের গ্রীষ্মে উত্তর ইরাকের কোজো এলাকা থেকে ধরে নিয়ে আইএসের একটি পক্ষের কাছে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয় আরেকটি পক্ষ। অনেক কষ্ট-সংগ্রাম-কৌশল করে কয়েক মাস পর পালিয়ে আসেন নাদিয়া। এরপর তিনি আইএসের হাতে বন্দি ইয়াজিদি নারীদের মুক্তির জন্য লড়াই শুরু করেন।  

নাদিয়া মুরাদ হলেন শান্তিতে নোবেল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ। সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ১৭ বয়সে ২০১৪ সালের শান্তিতে নোবেল পান পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই।

আইএসের কবল থেকে পালিয়ে আসার পর নাদিয়া মুরাদের সাক্ষাৎকার>> ** চাইছিলাম, আমাদের যেন মেরেই ফেলা হয়!

আর ৬৩ বছর বয়সী স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ মুকওয়েগে কঙ্গোর সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার আক্রান্ত নারীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এমন মানবসেবার জন্য ২০০৮ সালে তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার পুরস্কার এবং ২০০৯ সালে ‘আফ্রিকান অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা লাভ করেন। নিজের হাসপাতালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীগুলোর ‘স্থায়ী নিরাপত্তা’ মর্যাদায় থাকছেন মুকওয়েগে। বিভিন্ন সময়ে তিনি যুদ্ধ-সংঘাতে ধর্ষণকে অস্ত্র বানানোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি।

এ বছর ৩৩১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। এদের মধ্য থেকে ডেনিস মুকওয়েগে ও নাদিয়া মুরাদকে পুরস্কারে ভূষিত করার কথা জানিয়ে নোবেল কমিটির প্রধান বেরিত রেইস বলেন, যুদ্ধে যৌন সহিংসতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধে নিজেদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে তারা এ পুরস্কার পেয়েছেন।

গত বছর শান্তিতে নোবেল পায় ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপনস (আইসিএএন)। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিক নিয়ে জনমত গড়ে তোলা ও চুক্তির মাধ্যমে এর ব্যবহার বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এ পুরস্কার দেওয়া হয় সংগঠনটিকে।

এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে ফ্রান্সেস এইচ আর্নল্ড, জর্জ পি. স্মিথ ও স্যার গ্রেগরি পি. উইন্টার। এছাড়া পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে আর্থার আসকিন, জেরার্ড মোরউ ও ডোননা স্ট্রিকল্যান্ড, চিকিৎসাশাস্ত্রে যৌথভাবে জেমস পি. অ্যালিসন ও তাসুকো হনজো নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

এছাড়া আগামী সোমবার (৮ অক্টোবর) অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না। ২০১৯ সালে এবারেরটি মিলিয়ে একসঙ্গে দু’টি পুরস্কার দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৮
টিএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।