ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

অবশেষে সু চি বললেন, সংকট আরও ভালোভাবে সামলানো যেতো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
অবশেষে সু চি বললেন, সংকট আরও ভালোভাবে সামলানো যেতো

রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে অবশেষে বোধোদয় ঘটলো মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর বা কার্যত সরকারপ্রধান অং সান সু চির। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘রাখাইন ইস্যু’ আরও ভালোভাবে সামাল দিতে পারতো তার সরকার।
 
 

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে রাখাইন থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও প্রথমে এ বিষয়ে নীরব ছিলেন সু চি। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে সাফাই গাওয়ার ভূমিকায় নামেন তিনি।

সবশেষ তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ‘বাংলাদেশের অসহযোগিতা’ আবিষ্কার করে সেটাকেই দায়ী করেন।

তবে এমন স্ববিরোধী অবস্থানের কারণে তুমুল সমালোচিত সু চি এতোদিন পরে এসে বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) স্বীকার করে নেন, তার সরকার ও প্রশাসন আরও ভালোভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতো।

ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে আসিয়ানের ওপর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) বক্তৃতাকালে সু চি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সব পক্ষের প্রতি আমাদের সমান দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি। সেজন্য কারা আইনের শাসনে সুরক্ষিত থাকবে তা আমরা নিজেরা নির্ধারণ করতে পারি না। তবে যেটা বোঝা যাচ্ছে, আমাদের সরকার পরিস্থিতি যেকোনো পন্থায়ই আরও ভালোভাবে সামাল দিতে পারতো।

রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার তথ্য সংগ্রহে গিয়ে আটক হওয়া রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সোয়েকে (২৮) এ মাসের শুরুতে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় মিয়ানমার। তাদের কথিত ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের’ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এই দণ্ডাদেশের কারণে বিশ্বজুড়ে মিয়ানমার ও সু চির সমালোচনা আরও তীব্র হয়।

দুই সাংবাদিকের বিষয়ে সু চি বলেন, তারা সাজা পেয়েছেন আইন লঙ্ঘনের কারণে। তবে তারা আপিল করতে পারবেন।

জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায় এই দণ্ডাদেশকে বাকস্বাধীনতার ওপর আঘাত বললেও সু চি বলেন, এই আদেশ আইনের শাসন বজায় রেখেছে এবং এতে বাকস্বাধীনতার কোনো ক্ষতি হয়নি।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞ শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তারপর থেকে নিন্দা-সমালোচনার তোপে রয়েছে সু চির সরকার।

সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং যার জন্য সেনাবাহিনীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও (আইসিসি) বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ঘটনা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ কি-না, সেই বিষয়ে তারা তদন্ত করতে পারে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের এই চাপের কারণে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছালেও শুরু থেকেই এতে গড়িমসি করছে মিয়ানমার। ক’দিন আগে খোদ সু চিই বাংলাদেশকে দায়ী করে বলেন, বাংলাদেশের কারণেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না।

তবে বক্তব্য এমন দিলেও রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচনা হতে পারে, এ ধরনের সম্মেলন-সভা এড়িয়ে চলেছেন সু চি। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে তিনি অংশ নেননি। শোনা যাচ্ছে বিশ্বনেতাদের নিন্দা এড়াতে গত বছরের মতো এবারও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যাবেন না মিয়ানমারের এই নেত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।