ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

কাতার-ছেদ: মধ্যপ্রাচ্যের ‍আকাশ চলাচলেও ‘দমকা হাওয়া'

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৬ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৭
কাতার-ছেদ: মধ্যপ্রাচ্যের ‍আকাশ চলাচলেও ‘দমকা হাওয়া' কাতারে যাচ্ছে না সৌদি-আমিরাতের কোনো এয়ারলাইন্স

কাতারের সঙ্গে সবধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর দেশটিকে ঘিরে উড়োজাহাজ চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ চলাচলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

সোমবার (৫ জুন) সকালে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা আসে একে একে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মিশর, বাহরাইন ও ইয়েমেনের তরফ থেকে। দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপও সৌদির সিদ্ধান্ত অনুসরণের পথ বেছে নেয়।

কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণায় দেশগুলোর তরফ থেকে কাতারের সঙ্গে স্থল, জল ও আকাশসীমায় যোগাযোগ ছিন্ন কর‍ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।

এই ঘোষণার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের উড়োজাহাজ পরিচালনার বড় সংস্থা সৌদি আরবের সৌদি এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া), আরব আমিরাতের এমিরেটস, ইতিহাদ, ফ্লাই দুবাই ও এয়ার এরাবিয়া কাতারকে ঘিরে সব ধরনের ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত ঘোষণা করে।

প্রত্যেকটি এয়ারলাইন্সই মঙ্গলবার (৬ জুন) থেকে কাতারগামী কোনো ফ্লাইট আর পরিচালনা না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ ঘোষণা বলবৎ থাকবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মিশরও তাদের আকাশসীমায় কাতার থেকে আসা বা কাতারগামী কোনো ফ্লাইট চলাচল না করার নির্দেশনা জারি করে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই এয়ারলাইন্সগুলোর যেসব ফ্লাইট ইউরোপ বা এশিয়া থেকে যাত্রা করে কাতারের রাজধানী দোহায় বিরতি করতো, তা-ও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সেসব ফ্লাইটের কার্যসূচিতেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

অন্যদিকে, কাতারের জন্যও তাদের এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পরিচালনা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে আশপাশের রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্কচ্ছেদের কারণে। পারস্য উপসাগর উপকূলের উপদ্বীপ রাষ্ট্রটির দক্ষিণে আরব আমিরাত, পশ্চিমে সৌদি আরব এবং উত্তরে কিছু জলসীমা পেরিয়ে বাহরাইন। তাদের রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ পরিচালনা সংস্থা ‘কাতার এয়ারওয়েজ’ মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে ইউরোপ-পশ্চিমেও ব্যাপক সমাদৃত। কিন্তু এই বিচ্ছিন্নতার ফলে সেই কাতার এয়ারওয়েজকেও বিপাকে পড়তে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসলামিক স্টেট (আইএস), মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসকে সহযোগিতা বা সমর্থনের অভিযোগে এবং সৌদি আরবের অযৌক্তিক সমালোচনায় বিচ্ছিন্নতার মুখে পড়া কাতার সব দায় অস্বীকার করলেও সম্পর্কচ্ছেদকারী আরব দেশগুলো জানিয়ে দিয়েছে, জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিবেচনায় দোহার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে, আকাশ চলাচলে বড় সিদ্ধান্তের পাশাপাশি নৌ চলাচলেও কাতারের ওপর কড়া অবস্থান দেখাচ্ছে সম্পর্কচ্ছেদকারী দেশগুলো। সৌদি ও মিশর তাদের নৌবন্দরে কোনো ধরনের কাতারি আমদানি-রফতানিকারক জাহাজ ভিড়তে দিচ্ছে না। সংযুক্ত আরব আমিরাতও তাদের উপকূল থেকে কাতারমুখে ভাসানো জাহাজগুলোকে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

যদিও পরিস্থিতি প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়ে আসছে তুরস্ক ও কুয়েত। ইরান বলেছে, তারা পারস্য উপসাগর পেরিয়ে শিগগির প্রয়োজনীয় সামগ্রী কাতারে পৌঁছে দিতে শুরু করবে। ইরানও আবার তুরস্ক ও কুয়েতের মতো সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।

কাতারে সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি গাড়া যুক্তরাষ্ট্র ‘উপসাগরীয় দেশগুলোকে ঐক্য ধরে রাখা’র আহ্বান জানালেও ইসরায়েল সরাসরিই আরব দেশগুলোর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।