ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা হামলা চালায়, তাকে আরও ভয়াবহ হামলার মুখে পড়তে হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সময় শনিবার (২১ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানের যেকোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের জবাব হবে আরও শক্তিশালী এবং ভয়াবহ, যা আজ রাতের ঘটনাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
এর আগে শনিবার রাতে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। তিনি দাবি করেন, ফরদো, নাটানজ ও ইসফাহানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী পূর্ণ বোমা বর্ষণ করেছে এবং সব যুদ্ধবিমান নিরাপদে ফিরে গেছে।
তিনি দাবি করেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ ফরদো পরমাণু কেন্দ্র ‘ধ্বংস হয়ে গেছে’।
ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দখলদার ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে জানান, এই অভিযানে ব্যবহার করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান, যেগুলো গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।
তবে ফরদো কেন্দ্রটি আসলেই ধ্বংস হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিরপেক্ষভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্প তার দাবি উপস্থাপন করেছেন একটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাতে। অতীতে এমন একাধিক ঘটনা রয়েছে, যেখানে ট্রাম্প মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রচার করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এই ঘোষণাকে ঘিরে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই হামলাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাট দলের কংগ্রেস সদস্য রো খন্না অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প এই হামলা চালিয়েছেন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই। শনিবার এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ট্রাম্প কংগ্রেসের কোনো অনুমোদন ছাড়াই ইরানে হামলা চালিয়েছেন। আমাদের এখনই ওয়াশিংটনে ফিরতে হবে এবং থমাস ম্যাসি ও আমার উত্থাপিত ওয়ার পাওয়ারস রেজল্যুশনের ওপর ভোট দিতে হবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি অন্তহীন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ফাঁদে না পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে, যুদ্ধ ঘোষণা করার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মার্কিন প্রেসিডেন্টরা একের পর এক সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক।
উল্লেখ্য, রো খন্না ও রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য থমাস ম্যাসি একসঙ্গে আগে থেকেই একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র যেন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া আর কোনো সামরিক অভিযানে জড়িয়ে না পড়ে।
এমজে