পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান। এ নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনের প্রস্তুতিও চলছে।
সোমবার (১৬ জুন) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাই এনপিটি ছাড়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন, পার্লামেন্টে এনপিটি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা উত্থাপনের কাজ চলছে। তিনি জানান, তেহরান গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির বিপক্ষে অবস্থানই বজায় রাখছে।
সোমবার তেহরানে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট অধিবেশনে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান। সেখানে তিনি বলেন, আমরা পারমাণবিক অস্ত্র চাই না, আমাদের এমন কোনো উদ্দেশ্যও নেই। তবে মাসুদ পেজেশকিয়ান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম ইরান অব্যাহত রাখবে।
ইরানি সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘ইরনা’ জানিয়েছে, শত্রুদের নিষ্ঠুরতা ও অবিচারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, শত্রুরা যদি মনে করে, হত্যা, আক্রমণ কিংবা গুপ্তহত্যার মাধ্যমে তারা আমাদের জাতিকে মুছে ফেলতে পারবে, তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করছে। একজন বীর শহীদ হলে তার পতাকা তুলে ধরার জন্য শত শত নতুন বীর উঠে আসে। তারা অন্যায়, অপরাধ আর বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান আরও জানিয়েছেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
ইসরায়েলের টানা চারদিনের হামলার প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের এই বক্তব্যে দেশটির অবস্থান স্পষ্ট হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত এনপিটিতে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯১টি দেশ যুক্ত রয়েছে। চুক্তির আওতায় পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা বিস্তারে নিয়ন্ত্রণ আরোপের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্য রয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর এই চুক্তির অগ্রগতি পর্যালোচনা করে সদস্য দেশগুলো।
ইরান এর আগে একাধিকবার দাবি করেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও ইসরায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এনপিটি থেকে সরে আসার বিষয়টি নতুনভাবে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।
এমজে