ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

আধুনিক ক্যাপচা নিরাপত্তাকে বোকা বানালো যন্ত্র!

আইসিটি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৭
আধুনিক ক্যাপচা নিরাপত্তাকে বোকা বানালো যন্ত্র! আধুনিক ক্যাপচা নিরাপত্তাকে বোকা বানালো যন্ত্র!

ঢাকা: সম্প্রতি গবেষকরা এমন এক এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবন করেছেন, যা বর্তমান সময়ের ক্যাপচা নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পারদর্শী। 

তথ্যপ্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্যাপচা। ইন্টারনেটের কোনো সাইটে প্রবেশ বা কোনো অ্যাকাউন্টে লগইনের সময় সাধারণত কিছু এলোমেলো ছবি, অক্ষর বা সংখ্যা পূরণ করতে হয়।

এই এলোমেলো অক্ষর বা সংখ্যা পূরণের নিরাপত্তাকেই ক্যাপচা বলা হয়।

এই এলোমেলো অক্ষরগুলোর আকৃতি দেখে মানুষ সহজেই পড়ে ফেলতে পারে, কিন্তু যন্ত্রের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। মূলত স্প্যামারদের হাত থেকে রক্ষা এবং ব্যবহারকারী মানুষ নাকি যন্ত্র, তা বোঝার জন্য ক্যাপচা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভিকারিয়াস এমন এক অ্যালগরিদম উদ্ভাবন করেছে যা ক্যাপচা পূরণের ক্ষেত্রে মানবমস্তিষ্কের অনুকরণে কাজ করে। আকৃতির উপর ভিত্তি করে এর নিউরাল নেটওয়ার্ক ক্যাপচায় ব্যবহৃত চিহ্নগুলো সনাক্ত করতে পারে।  

ক্যালিফোর্নিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত এই সফটওয়্যারটি  ছবি সনাক্ত করতে নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকে। সাধারণত জটিল সমস্যার সমাধানের জন্যই এই নিউরাল নেটওয়ার্কের সাহায্য নেওয়া হয়। এ নিউরাল নেটওয়ার্ক আবার মানব-মস্তিষ্কের মতোই  নানা স্তরে বিভক্ত। প্রতিটি স্তর আলাদা আলাদা সমস্যা নিয়ে কাজ করে এবং সম্মিলিতভাবে এগুলো একটি চূড়ান্ত সমাধান খুঁজে বের করে। একে বলা হচ্ছে ‘রিকার্সিভ কর্টিক্যাল নেটওয়ার্ক। সংক্ষেপে আরসিএন।

২০১৩ সালে ভিকারিয়াস ঘোষণা করেছিল, তৎকালীন ইন্টারনেট নিরাপত্তায় ব্যবহৃত ক্যাপচার ব্যুহ ভেদ করতে  করতে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল তাদের প্রযুক্তি। এর এক বছরের মধ্যে গুগলের প্রযুক্তি ৯৯ শতাংশ সফলতা অর্জন করে ক্যাপচার ব্যুহ ভেদে।

 তাই প্রচলিত ক্যাপচার ধাঁচে পরিবর্তন আনেন ডিজাইনাররা। পরবর্তী প্রজন্মের এসব ক্যাপচা পূরণ করা মানুষের পক্ষেও অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

কিন্তু ভিকারিয়াসের আরসিএন পরবর্তী প্রজন্মের এসব ক্যাপচা পূরণে ৬৬ দশমিক ছয় শতাংশ ক্ষেত্রে সফল।  

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ভিকারিয়াস টিমের এ উদ্ভাবনটি সম্পর্কে গবেষণাপত্র প্রকাশ করে জনপ্রিয় বিজ্ঞানসাময়িকী ‘সায়েন্স’।  

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে যাবার সময় সাধারণত পাসওয়ার্ড দেওয়া হয় । কিন্তু বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারের সাহায্যে এসব পাসওয়ার্ড বের করে ফেলা যায়। সঠিক পাসওয়ার্ডটি বের না হওয়া অব্দি এসব কম্পিউটার প্রচণ্ড দ্রুত গতিতে সম্ভাব্য সকল পাসওয়ার্ড দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। যন্ত্র যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরও এই ক্যাপচা নিরাপত্তা পার করতে হয়।  

এ বিষয়ে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ সাইমন এডওয়ার্ড বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্যাপচা নিরাপত্তা নিয়ে এখনই উদ্বেগের কিছু নেই। কিন্তু নতুন উদ্ভাবনটি হয়তো আগামী তিন-চার মাসের মধ্যেই মূলধারার প্রযুক্তিবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং খুব দ্রুতই বর্তমান ক্যাপচা পদ্ধতি নিরাপত্তা রক্ষায় অযোগ্য প্রমাণিত হবে।  

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ক্যাপচা টেস্ট এরইমধ্যে সেকেলে হয়ে পড়া একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রযুক্তির অগ্রগতির দিক থেকে ভাবলে এর আরও উন্নত ভার্সন তৈরি করা বা  নতুন কিছু উদ্ভাবন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
এনএইচটি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।