ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

‘ইন্টারনেটকে সংবিধানে মৌলিক অধিকার উল্লেখ করা উচিত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
‘ইন্টারনেটকে সংবিধানে মৌলিক অধিকার উল্লেখ করা উচিত’ ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ইন্টারনেটকে সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংযোজন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বুধবার ( ২০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মাল্টিপ্লান সেন্টারে কম্পিউটার সিটি আয়োজিত ছয় দিনব্যাপী ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৬’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।



তিনি বলেন, ইন্টারনেট একটি মৌলিক অধিকার- এটি সংবিধানে লেখা উচিত। খাদ্য যেমন মৌলিক অধিকার ঠিক তেমনি ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ারও অধিকার সরকারের। প্রত্যেকের ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সমাজ গড়তে হলে সাইবার অপরাধীদের ধ্বংস করতে হবে। তাদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে। তাহলেই দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে। সাইবার অপরাধীদের আটকাতে না পারলে তাদের উৎপাতে আপনারা জর্জরিত হবেন।  

সরকার ডিজিটাল সমাজ তৈরিতে খুবই আগ্রহী জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সব মিলে অনেক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার।

সারাবিশ্বে এখন আলোচনার বস্তু তথ্যপ্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও জঙ্গিবাদ। এখন বিদেশি দখল নিয়ে আলোচনা হয়না। পৃথিবীতে এখন এ তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই তিনটি বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন বলেই তিনি আগের প্রধানমন্ত্রী থেকে আলাদা।
 
এক হাজার ব্যবসায়ীর মধ্যে একজনও এক কোটি টাকা আয় কর দেন না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা আয়কর দিলে দেশে পাঁচ লাখ কোটি টাকা আদায় সম্ভব। এক ব্যবসায়ী তার নিজের জন্য, নাতীর জন্য, বউয়ের জন্য গাড়ি ব্যবহার করছেন তাহলে তারা কেন আয়কর দিবেন না।

ফজলে নুর তাপস বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রই সরকারের পথচলাকে রোধ করতে পারবে না। দেশ এগিয়ে যাবে। দেশকে সরকার উন্নত করবেই।

১৬ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ১০ লাখ মানুষ ইনকাম ট্যাক্স দেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে ভ্যাট আরোপের ব্যাপারে এত কান্না কিন্তু ইনকাম ট্যাক্সের ব্যাপারে কেউ কথা বলেন না। কম্পিউটারের হার্ডওয়ারে ৪ শতাংশ ভ্যাট তেমন কিছু না। যারা বলেন ২৬ শতাংশ ভ্যাট দেওয়া হয় তারা ভুল বলছেন।  

ভ্যাটের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য তিনি আশ্বাস দেন।

ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ৩০-৩৫ বছর আগেও মানুষ কল্পনা করেনি যে কম্পিউটার বাজারে কেনা যাবে। এখন  বাজারে গেলেই কম্পিউটার পাওয়া যায়। এ থেকেই বোঝা যায় দেশে তথ্য প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।
 
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও অনেকেই ওয়াইফাই সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু ওয়াইফাই এখন ঘরে ঘরে। আগামী পাঁচ বছরে দেশ তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, ২০২৫ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে চার কোটি তরুণ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এসময় তিনি তথ্য প্রযুক্তিতে আরোপিত ভ্যাটের নামে যে হয়রানি তা থেকে কিভাবে দ্রুত বের হওয়া যায় সেজন্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তিতে। ইন্টারনেটের অধিকার পূরণ করার দায়িত্ব সরকারের।

ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ারের আহ্বায়ক তৌফিক এহেসানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স (এফবিসিসিআই)’র সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এস এ কাদের কিরণ, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি এ এইচ এম মাহফুজুল আরিফসহ অনেকে।

‘ভিশন টু সার্ভ গো উইথ’ শ্লোগানে সপ্তম এ আইসিটি মেলা চলবে ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

মেলায় প্রতিদিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকবে প্রযুক্তি পণ্যের ওপর আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়। দুই ঘণ্টা পর পর র‌্যাফেল ড্র, রক্তদান কর্মসূচি, এন্ট্রিপাসের সঙ্গে ফ্রি মুভি দেখার সুবিধা, ফ্রি ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই সুবিধা, গেমিং জোন, ফটোগ্রাফি ও সেলফি প্রতিযোগিতা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পিঠা উৎসব ও প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে মেলায়।

এছাড়াও মেলার শেষদিন বিকেলে আইসিটি সেক্টরে অবদান রাখার জন্য গুণীজন সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
এমআইকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।