ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

‘বন্ধন’-এর মধ্য দিয়ে দুই বাংলার বন্ধন আরো দৃঢ় হলো: মমতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৭
‘বন্ধন’-এর মধ্য দিয়ে দুই বাংলার বন্ধন আরো দৃঢ় হলো: মমতা খুলনার পথে রওয়ানা দিল 'বন্ধন এক্সপ্রেস; ছবি: বাংলানিউজ'

কলকাতা: ভিডিও কনফারেন্সে খুলনা-কলকাতা দ্বিতীয় মৈত্রী ট্রেন “বন্ধন এক্সপ্রেস’’-র উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দুই বাংলার বন্ধন আরো দৃঢ় হলো--এমন কথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।  দিনটিকে দুই দেশের কাছে এক ঐতিহাসিক দিন বলেও আখ্যা দিলেন।

মমতা বললেন, ভারত-বাংলাদেশ এই দুই দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ চিরকালই সহযোগিতা ও সমন্বয় রক্ষা করে থাকে।  ১৯৬৫ সালে বরিশাল এক্সপ্রেস চালু ছিল দুই বাংলার মধ্যে।

 দুটি ব্রিজ ও একটি রেল চালু হওয়ায় দুই দেশের মানুষ আরো কাছাকাছি এলো। ভাষার দিক থেকে দুই বাংলা এক।  তাই দুই দেশের ঐক্য, সম্প্রীতি আরও দৃঢ় হোক, এটাই আমাদের কাম্য।  বন্ধন এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে বন্ধন আরো দৃঢ় হোক দুই বাংলার।  আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা আমার দিদিকে ভারত তথা পশ্চিমবাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানাই এই ভিডিও কন্ফারেন্সের মধ্য দিয়ে।

জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক চিরকালই মধুর ছিল ও থাকবে।  ভারতের জনগণকে দেরীতে হলেও বিজয়া ও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই।  শুধু রেলপথ নয়, জলপথ বা আকাশপথ নয়, দুই দেশের মানুষের যোগাযোগ যতো বাড়বে, ততোই সম্পর্কও আরো দৃঢ় হবে।  আমি এই অনলাইনের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলাদেশে আবার আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

সবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি তার বক্তব্য রাখেন।  এবং সবাইকে চমকে দিয়ে তার আশিভাগ বক্তব্য বাংলা ভাষাতেই রাখেন।  

নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমি সব সময় সুম্পর্ক রেখে চলার চেষ্টা করি।  আমি মনে করি, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ঠিক সেই রকম সুসম্পর্কই গড়ে তোলা উচিত, যেরকমটি প্রতিবেশীর সঙ্গে হয়ে থাকে।  যখন ইচ্ছা হোক কথা বলা বা যখন ইচ্ছা হোক দেখা করার সুসম্পর্ক।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যে স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশ গড়ার, আমরা শেখ হাসিনার পাশে থেকে তাকে সবসময় সহযোগিতা করব।

ভিডিও কনফারেন্স বাদেও কলকাতা স্টেশনে যারা অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন, শিয়ালদহ স্টেশনের বিজনাল ম্যানেজার বাসুদেব পন্ডা, বিধায়ক মালা রায়, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইস্টার্ন রেলওয়ের শাখা জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্র রাও ও বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান সহ রেলের কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সময় ১১টা ২০ মিনিটে বাঁশি বাজিয়ে সবুজ পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশের খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বন্ধন এক্সপ্রেস; ছবি: বাংলানিউজহরিন্দ্র রাও বলেন, দুই দেশের মধ্যে রেল সম্পর্কে নতুন দিক উন্মোচন হল বন্ধন এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে।  এবং আগামীকাল থেকে অর্থাৎ ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ও বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রীদের বর্ডারে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস চেকিং মাঝপথে করাতে হবে না।  অর্থাৎ দর্শনা ও গেদে সীমান্তে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস চেকিং আর করতে হবে না।  এখন থেকে কলকাতা (চিৎপুর) স্টেশনে ট্রেন ছাড়ার আগেই সব চেকিং ও ইমিগ্রেশন সেরে ফেলা হবে।  তবে এর জন্য ট্রেন ছাড়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে যাত্রীদের স্টেশনে পৌঁছাতে হবে।  ঢাকা থেকে রওনা দেওয়া আন্তর্জাতিক যাত্রীরাও একই সুবিধা পাবেন।

সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটা রেল চালু করে দিলেই হয় না।  দুই দেশের নিরাপত্তার দিকটাতেও নজর রাখতে হয়।  নজর রাখতে হবে সীমান্তে রেলপথ দিয়ে যাওয়া-আসা।  অসাধু উপায়ে কেউই যেন দুই দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে।  তখনই সুসম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।  বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই আমি সরকারিভাবে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম।  দুই দেশের আত্মিক যোগ কতোটা তা বাংলাদেশে না গেলে টের পাওয়া যায় না, আর যাবেও না।

অনুষ্ঠানের মাঝপথেই ভারতীয় সময় ১১টা ২০ মিনিটে বাঁশি বাজিয়ে সবুজ পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশের খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় খুলনা-কলকাতাগামী বন্ধন এক্সপ্রেস। এর দশটি কামরাই সহ সম্পূর্ণ এসি। এর যাত্রী ধারণক্ষমতা ৪৫৬ জন।   

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
ভিএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।