ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৩ জুন ২০২৫, ০৬ জিলহজ ১৪৪৬

ভারত

ভারতে ফের লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, চারদিনের ব্যবধানে সংক্রমণ তিনগুণ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৭, মে ৩১, ২০২৫
ভারতে ফের লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, চারদিনের ব্যবধানে সংক্রমণ তিনগুণ 

ভারতে ফের বাড়তে শুরু করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। চলতি মাসের ২৬ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে চারদিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

এই সংক্রমণের মধ্যে দেশটিতে কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফের ভারতজুড়ে করোনা ওয়েভের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, শনিবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে করোনাভাইরাসে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে ভাইরাসটিতে মোট তিনজন মারা গেছেন। মন্ত্রণালয়ের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ‘কোভিড-১৯ ড্যাশবোর্ডে’ আজ শনিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এনডিটিভি আরও জানিয়েছে, ২৬ মে পর্যন্ত ভারতে মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১০ জন। সেখানে ৩০ মে পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১০ জনে। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে সংক্রমণ প্রায় তিনগুণ!

আক্রান্তদের মধ্যে কেরালায় ১১৪৮ জন, মহারাষ্ট্রে ৪২৪, দিল্লিতে ২৯৪ এবং গুজরাটে ২২৩ জন রয়েছে। তামিল নাড়ুতে ১৪৮ ও কর্ণাটকে ১৪৮ জন আক্রান্ত। বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৬ জন।

এছাড়া, রাজস্থানে ৫১, উত্তরপ্রদেশে ৪২, পুদুচেরিতে ২৫, হরিয়ানায় ২০, অন্ধ প্রদেশে ১৬, মধ্য প্রদেশে ১০, গোয়ায় ৭ জনের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। উড়িষ্যা, পাঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীরে চারজন করে করোনা শনাক্ত রোগী মিলেছে। তেলেঙ্গানা, অরুণাচল প্রদেশ ও চন্ডীগড়ে ৩ জন করে মিলেছে আক্রান্ত।

ড্যাশবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দিল্লিতে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৭৫। গতকাল শুক্রবারের পর থেকে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত ৮১ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

তবে ফের করোনার বিস্তারের বিষয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা। দেশটিরতে করোনার সংক্রমণের জন্য ‘অমিক্রন’ সংশ্লিষ্ট নতুন ধরনকে দায়ী করছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অমিক্রনের দুটি সাব-ভ্যারিয়ান্ট এলএফ৭ এবং এনবি১.৮.১। স্ট্রেইন জেএন.১-ও নামের নতুন আরেক ধরনের সংক্রমণ। এবারে করোনা আক্রান্তদের শরীরে সাধারণ ফ্লুয়ের মতো লক্ষণ-ই দেখা যাচ্ছে। উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, অবসাদ।

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্য হাসপাতালগুলিকে বিছানা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, পরীক্ষার কিট এবং ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বয়স্ক, গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুদের জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। বা জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) মহাপরিচালক ডা. রাজীব বাহল সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর এই নতুন রূপটি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের কেবল সতর্ক থাকতে হবে। সরকার এবং সমস্ত সংস্থা কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। ’

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব বলেছেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণরূপে সতর্ক এবং সমস্ত রাজ্যের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ’

এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।