ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

কিনু দিয়ে কমলার চাহিদা মেটাচ্ছে আগরতলাবাসী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
কিনু দিয়ে কমলার চাহিদা মেটাচ্ছে আগরতলাবাসী

আগরতলা (ত্রিপুরা): শীতের মৌসুমি ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কমলা। এ ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।

কমলা মানুষের ত্বকের সৌন্দর্যের জন্য খুবই উপকারী। শীতকাল এলেই প্রচুর পরিমাণে কমলা বিক্রি হয়। মানুষের মধ্যে এর ব্যাপক চাহিদার জন্য সব ফলের দোকান, এমন কি খুচরা বিক্রেতারা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরে কমলা বিক্রি করেন।

ত্রিপুরা রাজ্য কমলার জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে রাজ্যের উত্তর জেলার জম্পুই পাহাড়ের কমলা খুব সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশে এর কদর রয়েছে। এ ছাড়া রাজ্যের শাখানটাং পাহাড়ে, বড়মুড়া পাহাড়সহ আরও কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে কমলা চাষ হচ্ছে।

রাজধানী আগরতলা শহরসহ রাজ্যের প্রতিটি বাজারে রয়েছে কমলা। কিন্তু বর্তমানে কমলা বলে আমরা বাজারে যা দেখছি তার বেশিরভাগই কমলা নয়, এগুলোর নাম কিনু বলে জানালেন আগরতলার খুচরা ব্যবসায়ীরা। এগুলো মূলত রাজস্থান ও পাঞ্জাব রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে চাষ হয় এবং দেশ-বিদেশে রপ্তানি হয়, যা রাজ্যের কমলার চাহিদাও মেটাচ্ছে। কমলার মতো কিনুতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তবে কমলার মতো এত সুস্বাদু নয়, টক হয়ে থাকে। কিনুর বাইরের দিকের অংশ কমলার চেয়ে অনেক উজ্জ্বল ও ভারি হয়ে থাকে। তবে এর আকর্ষণীয় রঙের কারণে এক ঝলকে সবাই আকর্ষিত হয়ে পড়েন। কিন্তু খাওয়ার পর কমলার সঙ্গে এর স্বাদের পার্থক্য বুঝতে পারেন মানুষ।  

রাজ্যে এত ভালো মানের কমলা উৎপাদন হওয়ার পরও কেন বহিঃরাজ্যের ভিন্ন জাতের ফলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসায়ীরা জানান, জম্পুই পাহাড়ের বাগানগুলো দীর্ঘ বছরের পুরাতন হয়ে যাওয়ায় এবং কমলা চাষের তুলনায় সুপারি চাষ বাণিজ্যিকভাবে বেশি লাভবান হওয়ার কারণে সেখানে বসবাসরত জনজাতি অংশের মানুষ সুপারি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

রাজ্যের বাকি অংশে যে পরিমাণ কমলা চাষ হয় তা পর্যাপ্ত নয়। তাই রাজ্যের কমলার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য বহিঃরাজ্য থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। জম্পুই’র মতো একইভাবে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার জনজাতি অংশের মানুষ কমলা চাষ ছেড়ে সুপারিশ চাষে মনোযোগ দিয়েছেন। কমলার উৎপাদন দিন দিন কমে আসছে, তাই কমলার চাহিদা মেটাতে বাধ্য হয়ে অপেক্ষাকৃত কম স্বাদের কিনু বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে রাজ্যের উৎপাদিত কমলার চাহিদা বেশি রয়েছে। কিন্তু কমলা না পাওয়ায় কিনুই কিনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

রাজ্যের পাহাড়ের কমলা বলে বাজারে যে কমলাগুলো বিক্রি করা হচ্ছে এগুলো জম্পুই’র নয়। এর বেশিরভাগ আসছে প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরাম থেকে। জম্পুই ও মিজোরাম একেবারে পাশাপাশি তাই এ দুই জায়গার আবহাওয়াও এক। ফলে মিজোরামের কমলাকে জম্পুই পাহাড়ের কমলার নাম করে সহজেই বিক্রি করা যাচ্ছে বলেও জানান এক ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এসসিএন/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।