জাতীয় খেলা কাবাডিকে ঘিরে এবার বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আসছে এক ঐতিহাসিক আয়োজন। আগামী ১৫ থেকে ২৫ নভেম্বর মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর।
মূলত ভারতের হায়দরাবাদে আগস্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবারের বিশ্বকাপ। কিন্তু আয়োজকরা পিছিয়ে গেলে আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশন (আইকেএফ) বিকল্প আয়োজক হিসেবে প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশকে। দ্রুত সরকারের অনুমোদন পেয়ে আয়োজনের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘ভারতে আয়োজন স্থগিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ফেডারেশন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিবাচক সাড়া দিই। সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পরই আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। ’
১৪ দেশের এই বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ কোটি টাকার বাজেট নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। এর মধ্যে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ৫ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে। বাকি অর্থ স্পনসরদের সহায়তায় জোগাড়ের পরিকল্পনা রয়েছে। নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর বিমানভাড়া বহন করবে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন। বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর থেকে ফেরার আগ পর্যন্ত তাদের থাকা-খাওয়া ও স্থানীয় পরিবহন ব্যয় আমাদের বহন করতে হবে। এজন্য পৃষ্ঠপোষক সংস্থাগুলোর সহায়তা নিয়েই এগোচ্ছি। ’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম জানান, সরকার এই আয়োজনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ মানেই দেশের মর্যাদার প্রতীক। আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় দ্রুত অনুমোদন দিয়েছে, কারণ এটি শুধু কাবাডির নয়, বরং বাংলাদেশেরই গৌরবের আয়োজন। ’
ফেডারেশনের সহসভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন জানিয়েছেন, স্টেডিয়াম ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আইকেএফের সব নির্দেশিকা মেনে আয়োজন করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। ’
২০১২ সালের পর এবারই দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ১৪ দেশ। বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, কেনিয়া, উগান্ডা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, চাইনিজ তাইপে, আর্জেন্টিনা ও জাঞ্জিবার। পাকিস্তান ও পোল্যান্ড স্ট্যান্ডবাই দল হিসেবে তালিকাভুক্ত আছে।
দলগুলোকে দুই গ্রুপে ভাগ করে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টুর্নামেন্টের ড্র ও সময়সূচি চূড়ান্ত হবে বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক দিন আগে। সাম্প্রতিক নারী এশিয়া কাপে ব্রোঞ্জ জেতা বাংলাদেশের লক্ষ্য এবার আরও বড়। সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা এখন অনেক পরিণত। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্তত সেমিফাইনাল কিংবা শীর্ষ তিনে জায়গা করে নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। ’
এআর/আরইউ