ঢাকা, সোমবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারী হলেন জুলাইযোদ্ধা, সমালোচনার ঝড়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২৭, অক্টোবর ১৯, ২০২৫
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারী হলেন জুলাইযোদ্ধা, সমালোচনার ঝড় আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পূর্বে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কথিত জুলাইযোদ্ধা আশিক বিল্লাহের দুটি পোস্টার

নড়াইল: নড়াইলে জুলাইযোদ্ধা হিসেবে আহতদের নামের তালিকায় শেখ আশিক বিল্লাহ নামে আওয়ামী লীগের ঘোর সমর্থক একজনের নাম এসেছে। যিনি ইতিপূর্বে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে আদালতে মানহানি মামলা দায়ের করেছিলেন।

রোববার (১৯ আক্টোবর) সকাল থেকেই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

আশিক বিল্লাহ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে। তিনি ইতিপূর্বে কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ছিলেন। এরপর সুযোগ বুঝে দল পরিবর্তন করে ডেমক্রেটিক পার্টি এবং সর্বশেষ জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য বনে গেছেন।

স্থানীয়রা জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী নিহত এবং আহতদের সহায়তা ও সরকারিভাবে লিপিবদ্ধ করতে দেশব্যাপী তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই তালিকায় নড়াইল জেলায় দুজন নিহত এবং আহত ২৭ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।  

আহতদের তালিকায় নড়াইল জেলার ২২ নম্বর ক্রমিকে নাম রয়েছে শেখ আশিক বিল্লাহর, তার গেজেট নং-৩৩৬৯১।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নামে নড়াইলের একটি আদালতে শেখ আশিক বিল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি মানহানি মামলা দায়ের করেন।  

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে একইদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নামে আরেকটি মানহানি মামলা দায়ের করেন তিনি।

এ বিষয়ে নড়াইল জেলা বি এনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ জাতীয় সুযোগ সন্ধানী মানুষের নাম তালিকায় আসলে তার দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। সঠিক যাচাই না করে কীভাবে তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হলো তার দায় প্রশাসনের।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নড়াইল জেলার যাদবপুর এবং মহিষখোল অনলাইন প্রতারণার জন্য পরিচিত। এই এলাকা হতে অনলাইন প্রতারণার মূল হোতা আশিক বিল্লাহ। ইতিপূর্বে তিনি আপন ভাই মাওলানা কুদ্দুসের দুই ছেলে অনলাইন প্রতারণা করে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছিলেন। আশিক বিল্লাহ ধরাছোয়ার বাইরে থেকে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

কালিয়ার পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনসিপি নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, আশিক বিল্লাহর নাম কীভাবে জুলাইযোদ্ধাদের তালিকায় আসলো তা জানা নেই। তবে আশিক বিল্লাহ ও বোরহান কবীর দুজনই অনলাইন প্রতারণার গুরু। তিনি প্রতিনিয়ত দল পরিবর্তন করে ক্ষমতার সাথে থেকে প্রতারণা চালিয়ে গেছেন।

নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, ‘জুলাইযোদ্ধা হিসেবে আহতদের তালিকায় আশিক বিল্লাহর নাম কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সে সম্পর্কে আমার জানা নেই। ’

শেখ আশিক বিল্লাহ বলেন, আমি একজন ‘প্রকৃত জুলাইযোদ্ধা’। আন্দোলনের সময় আমি ১৯ জুলাই ঢাকার মহাম্মদপুর এলাকায় সক্রিয়ভাবে যোগদান করে আহত হয়েছিলাম। আমার চিকিৎসা সনদসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মোতাবেক আমি ‘প্রকৃত আহত জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।

এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।