মাদারীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটিতে ছাত্রলীগ, একাধিক সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত ও অপরিচিতদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে মাদারীপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) রাতে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মতামত জানাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাদারীপুরের নেতারা। মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা কেউই জানতাম না। গত রাতে ফেসবুকে হঠাৎ দেখি মাদারীপুর সমন্বয় কমিটি! আমরা অবাক হই। কমিটির বেশিরভাগই অপরিচিত। কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনসহ একাধিক সংগঠন থেকে বহিষ্কৃতরাও রয়েছে। অন্যদিকে বেশিরভাগই অপরিচিত। যাদের আন্দোলনে দেখা যায়নি। এভাবে কমিটি গঠন গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি জানান।
এদিকে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবগত করা হয়েছে উল্লেখ করে মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। তারা মিটিং করবেন। আমরাও রাতে বসব সবাইকে নিয়ে। আপাতত আমরা এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে কেন্দ্রকে অবগত করেছি। তবে প্রধান সমন্বয়কারীকে আগে না চিনলেও কমিটির কাগজ দেখে খোঁজ খবর নিয়েছি। তার বিষয়ে আমরা পজেটিভ। তবে অন্যদের বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। ’
জানা গেছে, সমন্বয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে শিল্পপতি শহিদুল ইসলামকে। যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে পাঁচজনকে রাখা হয়েছে। তারা হলেন - অমিত হাসান, শেখ নাজনিন আহমেদ, হাফেজ মোহাম্মাদ হাসিবুল্লাহ, আজগর শেখ ও নেয়ামত উল্লাহ। বাকি ২৫ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কমিটি আহব্বায়ক কমিটি গঠন করবে বলে জানা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন,‘হুট করেই একটি কমিটি গঠন করে দিল। যার সদস্যদের আমরা যারা আন্দোলনকারী ছাত্র রয়েছি তারা চিনি না। এখানে বিতর্কিত ব্যক্তিও রয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত যোদ্ধা বা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই রাতের আঁধারে এই সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে গ্রহণ করার সুযোগ নেই। যারা আন্দোলনে ছিলেন না, তারাই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন,‘১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী অমিত হাসান আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন তথ্যপ্রযুক্তি লীগের মাদারীপুর পৌরসভা শাখার সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। ৩ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী হাসিবুল্লাহকে আমাদের একাধিক সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরকম আরও ব্যক্তি রয়েছেন কমিটিতে। অথচ আন্দোলনকারীরা নেই!’
এদিকে প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘এটা সার্চ কমিটি। আমি ছাত্রদের অভিভাবক হিসেবে রয়েছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনে যারা সক্রিয় ছিলেন যাচাই-বাছাই করে তাদের নিয়েই কমিটি গঠন হবে। তাছাড়া জুলাই আন্দোলনে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহর সঙ্গেও কথা বলেছি। ওরা পজেটিভ। ’
তবে প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এসএএইচ