১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার ইসলামপুরে জন্ম নেন আহমেদ আকবর সোবহান। তাঁর বাবা ছিলেন আইনজীবী, মা গৃহিণী।
প্রথমে অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে কাজ করলেও ১৯৮৭ সালে আবাসন ব্যবসায় নামার মধ্য দিয়েই তিনি খুঁজে পান নিজের মূল পথ। তখন ঢাকায় ‘নিজের একটি বাড়ি’ বানানোর স্বপ্ন অনেকের থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা ছিল কঠিন। প্রথম দিকে চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। প্লট কিনে বাড়ি করার ধারণাটি তখন একেবারেই নতুন।
মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চাইত না। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহান তাঁর সততা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জনের পথে হাঁটলেন। দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে প্লট কেনার সুযোগ এবং নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের কাছে প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি চালু করেন তিনি আবাসন খাতে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখে ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস জন্মাতে শুরু করে।
যাঁরা একসময় ঢাকায় এক টুকরা জমির স্বপ্ন দেখতেন, তাঁরা নিজেদের সাধ্যের মধ্যে বসুন্ধরায় প্লট কিনতে শুরু করলেন।
ঢাকায় মানুষের চাপ বাড়বে পাঁচ দশক আগেই সেটা বুঝতে পেরেছিলেন এক তরুণ উদ্যোক্তা। মানুষের চাপ বাড়লে তৈরি হবে আবাসনসংকট। আর সেই সংকট সমাধানের দুঃসাহসী যাত্রা শুরু করেছিলেন যিনি, তিনি হলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রা.) লিমিটেড।
তখন পূর্বদিকে বালু নদের ধারে ছিল পতিত জমি, অনাবাদি মাঠ আর অবহেলিত জনপদ। এই জমিই একদিন দেশের সবচেয়ে বড় ও অভিজাত আবাসিক এলাকায় পরিণত হবে—এমনটি তখন খুব কম মানুষই ভাবতে পেরেছিল। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহানের সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি ও অক্লান্ত প্রচেষ্টা সেই অসম্ভবকেও সম্ভব করে তুলল। কৃষকের ছোট ছোট জমি হয়ে উঠল সোনার খনি, আর হাজারো পরিবার পেল নতুন জীবনের স্বপ্ন।
পুরান ঢাকা থেকে বসুন্ধরার পথে
১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার ইসলামপুরে জন্ম নেন আহমেদ আকবর সোবহান। তাঁর বাবা ছিলেন আইনজীবী, মা গৃহিণী। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। পড়াশোনা শেষে সত্তরের দশকে শুরু করেন ব্যবসায়িক জীবন। প্রথমে অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে কাজ করলেও ১৯৮৭ সালে আবাসন ব্যবসায় নামার মধ্য দিয়েই তিনি খুঁজে পান নিজের মূল পথ।
তখন ঢাকায় ‘নিজের একটি বাড়ি’ বানানোর স্বপ্ন অনেকের থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা ছিল কঠিন। প্রথমদিকে চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। প্লট কিনে বাড়ি করার ধারণাটি তখন একেবারেই নতুন। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চাইত না। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহান তাঁর সততা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জনের পথে হাঁটলেন। দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে প্লট কেনার সুযোগ এবং নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের কাছে প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি চালু করে তিনি আবাসন খাতে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখে ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস জন্মাতে শুরু করে। যাঁরা একসময় ঢাকায় এক টুকরা জমির স্বপ্ন দেখতেন, তাঁরা নিজেদের সাধ্যের মধ্যে বসুন্ধরায় প্লট কিনতে শুরু করলেন।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞের একটি মানবিক দিকও ছিল। যে বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকদের জমি ছিল সামান্য, বসুন্ধরা প্রকল্পের ফলে সেই জমির দাম বহুগুণে বেড়ে যায়।
আর সত্যি তা-ই হলো। পরিকল্পিত চারটি ব্লক-এ, বি, সি ও ডি দিয়ে শুরু হওয়া বসুন্ধরা আজ ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ আবাসিক এলাকা।
পরিকল্পিত আবাসনের নতুন অধ্যায়
বসুন্ধরার সূচনা শুধু একটি আবাসন প্রকল্প নয়, এটি ছিল এক নতুন নগরায়ণ ধারণার জন্ম। অধিকাংশ রিয়েল এস্টেট কম্পানি শুধু প্লট বিক্রি করেই দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু বসুন্ধরা শুরু থেকেই ভিন্নধারার পরিকল্পনা নেয়। জমি বিক্রি করেই তারা থেমে থাকেনি; বরং সবুজ বনায়ন, আধুনিক নগর অবকাঠামো, সড়ক নেটওয়ার্ক, নিরাপত্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, করপোরেট অফিস, ব্যাংক, সুপারশপ, কনভেনশন সিটি, খেলার মাঠ—সব মিলিয়ে এক পূর্ণাঙ্গ নগরজীবন গড়ে তুলেছে।
বসুন্ধরার সবচেয়ে বড় অবদান শুধু উচ্চবিত্তের জন্য অভিজাত আবাসন তৈরি নয়; বরং চারপাশের সাধারণ কৃষকের জীবন বদলে দেওয়া। যাঁদের ছোট্ট জমি ছিল, তাঁরা একসময় পেয়ে গেলেন কোটি টাকার মালিকানা। জমি বিক্রি করে তাঁরা গড়ে তুললেন বাড়ি, গাড়ি, ব্যবসা। বসুন্ধরা তাঁদের ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে।
আহমেদ আকবর সোবহান প্রায়ই বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ এই এলাকার লক্ষাধিক কৃষককে কোটি টাকার মালিক বানিয়েছে। আমাদের অন্য প্রকল্পগুলোও একইভাবে মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। ’
নিরাপদ ও আধুনিক বসতি
সুবিশাল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সবচেয়ে বড় গর্ব হলো নিরাপত্তা ও পরিকল্পনা। প্রায় এক হাজার নিরাপত্তাকর্মী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। সিসিটিভি, নিরাপত্তা হেল্পলাইন, নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা টিম—সব মিলিয়ে এটি আজ দেশের সবচেয়ে নিরাপদ আবাসিক এলাকা। এখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের কনভেনশন সিটি, নামকরা স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি, স্পোর্টস সিটি, সুপারশপ, ব্যাংক, আধুনিক হাসপাতাল ও বিনোদনকেন্দ্র। এক কথায় বসুন্ধরা এখন একটি সিটি উইদিন সিটি।
আবাসন থেকে শিল্পায়ন
বসুন্ধরা গ্রুপের শিল্প-উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নানা পণ্যে আমদানিনির্ভরতা কমেছে। অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছে এই গ্রুপ।
ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট দিয়েই শুরু; কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি আহমেদ আকবর সোবহান। আবাসন খাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন নানা আমদানিবিকল্প ভারী শিল্প।
আজ বসুন্ধরা গ্রুপের রয়েছে ইস্পাত ও প্রকৌশল, সিমেন্ট, কাগজ ও টিস্যু, এলপি গ্যাস, স্যানিটারি ন্যাপকিন, খাদ্য ও পানীয়, বিটুমিন, অয়েল অ্যান্ড গ্যাস, গোল্ড রিফাইনারি, জাহাজশিল্প, আইসিটি, ড্রেজিং, পরিবহন, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং, ক্রীড়া, হাসপাতাল, ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
এই বৈচিত্র্যময় শিল্পায়ন দেশের আমদানিনির্ভরতা কমিয়েছে, কর্মসংস্থান তৈরি করেছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ছয় লাখ মানুষের। শুধু তা-ই নয়, বসুন্ধরা বহু বছর ধরেই দেশের শীর্ষ রাজস্বদাতা হিসেবে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।
আহমেদ আকবর সোবহান আরো বলেন, ‘আমাদের এই সফলতার পেছনে ব্যাংকারদের বড় ভূমিকা রয়েছে। আমার প্রতি ব্যাংকারদের যে আস্থা, আশা করি ভবিষ্যতেও তা থাকবে। ব্যাংকারদের ভালো ব্যবসায়ীদের খুঁজে ঋণ দিতে হবে। ’
সর্ববৃহৎ শপিং মল
১৯৯৮ সালে যখন আবাসন ব্যবসা তুঙ্গে, তখন আহমেদ আকবর সোবহান নির্মাণ করেন দেশের সর্ববৃহৎ ও আধুনিক শপিং মল ‘বসুন্ধরা সিটি’। এটি শুধু একটি শপিং মলই নয়, এটি ঢাকাবাসীর জন্য বিনোদন ও কেনাকাটার এক নির্ভরযোগ্য ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে আরো তিনটি শপিং মল।
আবাসন খাতের পথপ্রদর্শক
বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সূচনা হয়েছিল ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু সত্যিকারের শিল্পে রূপান্তর ঘটিয়েছে বসুন্ধরা। তাদের সাফল্য দেখে অসংখ্য নতুন প্রতিষ্ঠান এই খাতে যোগ দেয়।
আজকে যেকোনো নির্মাণসামগ্রীর বাজারে গেলে দেখা যায় বসুন্ধরা নামক একটি ব্র্যান্ড। বিশেষ করে বসুন্ধরা সিমেন্ট দেশের বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
এক-এগারোয় বসুন্ধরা গ্রুপ ধ্বংসের চেষ্টা
এক-এগারোর সময় বসুন্ধরা গ্রুপের অগ্রযাত্রা থমকে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তৎকালীন সরকারের আমলে বসুন্ধরা গ্রুপসহ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের ওপর ব্যাপক হয়রানি ও নির্যাতন চালানো হয়। বসুন্ধরা চেয়ারম্যানসহ পরিবারের অনেকের ও গ্রুপের ১৪ জন কর্মকর্তার নামে প্রায় ৩৫টি মিথ্যা মামলা করা হয়। সে সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তুলে নিয়ে এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত আটক রেখে অবর্ণনীয় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। জোরপূর্বক বসুন্ধরা গ্রুপের জমি বিক্রি করে ২০০৭ সালের ২৮ মে থেকে ২০০৮ সালের ১১ জুন পর্যন্ত ২৫৬ কোটি টাকা তৎকালীন একটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নিয়ে যায়। পরে টাকা ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করলে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা আপিল বিভাগও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই টাকা আজও ফেরত আসেনি। এভাবে বসুন্ধরা গ্রুপ একের পর এক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়নোর চেষ্টা করেছে।
ক্রীড়ার পৃষ্ঠপোষক
শুধু ব্যবসা নয়, আহমেদ আকবর সোবহান ক্রীড়ারও এক নিবেদিত অনুরাগী। একসময় নিজেই হকি খেলতেন। তাঁর ভাই ছিলেন জাতীয় হকি দলের কিংবদন্তি আবদুস সাদেক।
আজ বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের অন্যতম বড় ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক। দেশে যে ফুটবল হারিয়ে যেতে বসেছিল, সেখানে বসুন্ধরার হাত ধরে ১৪টি ট্রফি জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। ক্রিকেটে রয়েছে বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্স। এর বাইরেও গলফ, কাবাডি, হকি—সব খেলাতেই বসুন্ধরা নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। সম্প্রতি আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আধুনিক স্পোর্টস সিটি নির্মাণ করেছে তারা।
নতুন প্রজন্মের হাতে নেতৃত্ব
বসুন্ধরা গ্রুপের বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের হাল ধরেছে নতুন প্রজন্ম। পুরো ব্যবসাকে বিভিন্ন সেক্টরে বিন্যস্ত করে ভবিষ্যৎ রূপরেখাও দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। বসুন্ধরা গ্রুপের নেতৃত্বে যুক্ত হয়েছেন চেয়ারম্যানের চার সন্তান—সাদাত সোবহান (চেয়ারম্যান, তানভীর বসুন্ধরা গ্রুপ), সাফিয়াত সোবহান (চেয়ারম্যান, সানবির বসুন্ধরা গ্রুপ), সায়েম সোবহান (চেয়ারম্যান, আনভীর বসুন্ধরা গ্রুপ) এবং সাফওয়ান সোবহান (চেয়ারম্যান, সাফওয়ান বসুন্ধরা গ্লোবাল)। তাঁদের হাতে বসুন্ধরা আরো সুসংগঠিতভাবে বিভাজিত হয়েছে নানা সেক্টরে এবং ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি হয়েছে দীর্ঘমেয়াদে।
সামাজিক দায়িত্ববোধ
শুধু ব্যবসায়িক অঙ্গনেই নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনেও দৃষ্টান্ত রেখেছেন আহমেদ আকবর সোবহান। সাফল্যের শীর্ষে অবস্থান করেও ভুলে যাননি দেশীয় সংস্কৃতি ও মানবতার কল্যাণে ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ। দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের কথাও মনে রেখেছেন সব সময়। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন নিত্যদিন। বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত দুটি মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের জীবনচলার পথ সুগম করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্ত। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ২০০৫ সাল থেকে সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করে আসছে, যার মাধ্যমে বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও হোমনার ৩৭ হাজার দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে।
অন্যদিকে সুবিধাবঞ্চিত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে আলোকিত করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যালয় স্থাপন এবং নারী ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য সচেতনতামূলক ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বর্তমানে ২১টি স্কুল, তিন হাজারের বেশি নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০টি পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শ্রেণির পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে।
এ ছাড়া নানা সময়ে বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বহু নজির রেখে চলেছেন আহমেদ আকবর সোবহান।
গণমাধ্যমে অবদান
পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমেও রেখেছে দারুণ ভূমিকা। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের অধীনে রয়েছে কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজ২৪, নিউজ টোয়েন্টিফোর, রেডিও ক্যাপিটাল ও টি স্পোর্টস। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই মিডিয়া হাউস বসুন্ধরার সামাজিক দায়িত্ব পালনেরই প্রমাণ। আবাসন খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার আবাসনসংকট সমাধানের যে দুঃসাহসী স্বপ্ন আহমেদ আকবর সোবহান দেখেছিলেন, তা আজ বাস্তব। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা শুধু একটি প্রকল্প নয়; বরং আধুনিক নগরায়ণের এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আবাসনের বিপ্লব ঘটিয়ে বসুন্ধরা যেমন নগরজীবনে স্বপ্ন বুনেছে, তেমনি হাজারো পরিবার ও কর্মসংস্থানে সমৃদ্ধ করেছে পুরো দেশকে। এখন বসুন্ধরা শুধু একটি আবাসন নয়, এটি বাংলাদেশে সম্ভাবনা, আস্থা আর উন্নয়নের প্রতীক।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান জীবিত মানুষের আবাসনের কথা শুধু ভাবেননি, মৃত্যুর পর কবরস্থানের কথাও ভেবেছেন। এ জন্য ১০৫ বিঘা জমি বরাদ্দ রেখেছেন।
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু নিজের নয়, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মানের বিষয়ে আমরা কখনো আপস করিনি, শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছি। এভাবে অনেক ব্যবসাতেই বসুন্ধরা প্রথম পা রেখেছে, এরপর বসুন্ধরার সাফল্যে অন্যরাও সেই ব্যবসায় এসেছে। ’
নিজের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করে এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমার বিষয়ে বলা হয়, আমি সব ব্যবসাতেই সফল হই। এর মূল কৃতিত্ব বসুন্ধরা গ্রুপের সব কর্মীর। তাঁরা সবাই প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের মনে করে কাজ করেন। সবাই মনে করেন যে প্রতিষ্ঠান ‘আমাদের’। আমাদের সব সফলতার মূল এই কর্মী বাহিনী। ”
এসআই