ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বেতনের পুরোটাই চলে যাচ্ছে বাজারে!

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
বেতনের পুরোটাই চলে যাচ্ছে বাজারে!

মাদারীপুর: শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাজার করতেই মাসের বেতন শেষ হয়ে যাচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের।

মাস শেষে পাওয়া বেতনের পুরোটাই চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজারে! ফলে জেলার স্বল্প আয়ের মানুষ বাজার পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন।

সরেজমিনে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। সপ্তাহের শেষে বাজার করতে গেলে গত সপ্তাহের বাজারের হিসাব মিলছে না ক্রেতাদের। শীত মৌসুমে বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির যথেষ্ট আমদানি থাকলেও সেই তুলনায় দাম বেশ চড়া। শীতকালীন মৌসুমী সবজির সময় এখন, এসময়ে দাম তুলনামূলক কম থাকার কথা হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ব্যতিক্রম।

বাজারে শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, সব রকম শাক-সবজি, লাউ, মুলা, শিম, গাজরসহ অন্যান্য শীতের সবজি দোকানে শোভা পাচ্ছে। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০/৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, মুলা ৩০, করল্লা ৭০/৮০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, নতুন আলু ১০০ টাকা, লাল শাক, পালং শাক প্রতি আঁটি ২০ টাকা, লাউ সাইজ অনুযায়ী ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে মাছ-মাংসের বাজারও অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর মাছের দাম তো আকাশ ছোঁয়া। তবে চাষের রুই, পাঙ্গাস, কই, পাবদা, চিংড়িসহ অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা কম ছিল বর্তমানে তাও বেড়েছে। পাঙ্গাস মাছ ১৯০/২০০ টাকা, পাবদা ৩৫০/৪০০ টাকা, কই মাছ ২০০/২৫০ টাকা, চিংড়ি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই মাছ ২৫০/৩০০ টাকা কেজি। বয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  

মো. ফজলুর রহমান নামে এক এনজিও কর্মী বলেন, মাসের বাজার খরচেই বেতনের বেশির ভাগ টাকা চলে যাচ্ছে। অন্যান্য খরচ করে কোনো সঞ্চয়ের সুযোগ থাকছে না। তাও অনেক হিসাব-নিকাশ করে চলতে হয় ইদানিং। সব কিছুর দাম বাড়তে থাকায় বেশ বিপাকে আছি। গরুর মাংস কেনার সামর্থ্য হয় না।

জেলার পাঁচ্চর বাজারে আলাপ হয় বাজার করতে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে। তারা বলেন, সংসার খরচের বেশির ভাগ টাকা চলে যায় বাজার করতেই। চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ হলে ধারদেনা করতে হয়। এরকম পরিস্থিতি এখন। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো কিছুর দাম বাড়বেই!'

মো. সজিব নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি। তাই খুচরাও বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। সে কারণে আগের চেয়ে ক্রেতাদের কেনার পরিমাণ কমে গেছে। এখন হিসাব-নিকাশ করে মানুষ কেনাকাটা করে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমাদের স্থানীয় সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় সবজি তেমন নেই বাজারে।

স্বল্প বেতনের চাকরিজীবী আর নিম্ন আয়ের মানুষের দৈনন্দিন বাজারেই চলে যায় বেতনের টাকা। এ কারণে চিকিৎসাসহ পারিবারিক অন্যান্য খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।