ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং: মজুচৌধুরীর হাটে আটকা ভোলাগামী ৫ শতাধিক লঞ্চযাত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং: মজুচৌধুরীর হাটে আটকা ভোলাগামী ৫ শতাধিক লঞ্চযাত্রী

লক্ষ্মীপুর: বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট থেকে ভোলাগামী সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এখানে প্রায় পাঁচ শতাধিক ভোলাগামী যাত্রী আটকা পড়েছেন।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘাটে নোঙর করা এসব নৌ-যানগুলো বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে চট্রগ্রাম থেকে বাসে করে বিভিন্ন যাত্রীরা মজুচৌধুরীর লঞ্চ ঘাটে আসেন। পরে নৌ-যান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন ঘাটে অপেক্ষারত শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।

লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট থেকে ভোলার ইলিশা ঘাটে চলাচলকারী লঞ্চ মেসার্স রাকিব নেভিগেশন কোং এর সুপারভাইজার মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত থেকে আমরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। অনুমতি পেলে আবার নৌ-যান চলাচল শুরু হবে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে আটকা পড়া যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে চররমনী মোহনের মাতব্বরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়। অন্যদিকে সোমবার বিকেলে প্রায় দুই শতাধিক যাত্রীকে ঘাটে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে আটকা পড়া ভোলার বাসিন্দা আলামিন, রবিউল, মো. রাসেল, হারুনসহ অনেকে বলেন, রোববার রাত ১টার পর থেকে চট্রগ্রাম-ভোলার উদ্দেশ্যে এসব যাত্রীরা লঞ্চঘাটে আসেন। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রাত থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। রাতে তারা লঞ্চেই রাত্রিযাপন করেছেন। সকাল থেকে লঞ্চে ছিলেন। প্রাশাসনের লোকজন এসে তাদের লঞ্চ থেকে বের করে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলেছে। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে গেছেন। আবার অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনীহা দেখিয়ে ঘাটের দোকানগুলোতে বসে আছেন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তারা।

আটকা পড়াদের অনেকেই বলেন, নৌ-যান বন্ধ থাকার কথাটি তারা জানতেন না। তাই তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে চট্রগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে এসেছেন বলেও জানান।

আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ভোলার বাসিন্দা ইমন বলেন, আমরা চারজন চট্রগ্রাম থেকে ভোলার উদ্দেশে লক্ষ্মীপুরে আসি। রাতে লঞ্চেই ছিলাম। আজ দুপুরে প্রশাসন আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এখানে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল বাংলানিউজকে বলেন, গতরাত থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক ভোলাগামী লঞ্চযাত্রী ঘাটে এসে আটকা পড়েছেন। এতে নারী, শিশুসহ সবাই দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। দুপুরে ডিসি, এসপি, ইউএনও এসে আটকা পড়াদের মধ্যে তিন শতাধিক লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠান। তাদের জন্য দুপুরে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতে আমাদের উদ্যোগে খিচুড়ি রান্না করা হবে। যে কয়দিন লঞ্চ না চলে, আটকা পড়াদের আশ্রয় দেওয়া হবে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে নদীতে সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লঞ্চঘাটে আটকা পড়াদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।