ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গা প্রবেশ ঠেকাতে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তে কঠোর নজরদারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
রোহিঙ্গা প্রবেশ ঠেকাতে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তে কঠোর নজরদারি

বান্দরবান: বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তে কঠোর নজরদারি করছে প্রশাসন। মিয়ানমার থেকে আর কোনো রোহিঙ্গা যাতে আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সেটা গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি করছে, আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও সর্বোচ্চ সর্তকাবস্থায় কাজ করছে।


 
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সীমান্ত নিয়ে আরও বলেন, সম্প্রতি আমি সীমান্তের পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য ঘুমধুম, তুমব্রু ও নোম্যান্স ল্যান্ডে ঘুরে এসেছি। আমি যতক্ষণ সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছিলাম, সেখানে কোনো গোলাগুলির আওয়াজ পাইনি। বর্তমানে আমার মনে হয়, সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার কিছু অংশে গোলাগুলির সংবাদ পাওয়া গেছে।  

সীমান্তবর্তী জনগণকে সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি একেক সময় একেক রকম হয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে যারা বসবাস করছে, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে এবং পরিস্থিতি যদি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তাহলে তাদের জন্য আমরা ব্যবস্থা করব। ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশি ৩০০ পরিবারের বসবাস রয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়েছেন। প্রতি পরিবারে চার থেকে পাঁচজন করে সদস্য রয়েছে এবং প্রতিটি পরিবারই একান্নবর্তী পরিবার আর সীমান্তের অবস্থা যদি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তাহলে আমরা আমাদের জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করব।  

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের মাত্রাতিরিক্ত গোলাবর্ষণের শব্দে বান্দরবান সীমান্ত পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। মঙ্গলবার ভোর হতেই থেকে থেমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণের আওয়াজ পাওয়া গেলেও বধুবার সকাল থেকে কোনো গোলাগুলির শব্দ এখনো পাওয়া যায়নি।

গেল এক মাস ধরে তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমার অংশে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমার সরকারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্স হচ্ছে। দু’পক্ষের সংঘাতে মাঝে মধ্যেই মর্টার শেলের গোলা এবং ভারি অস্ত্রের গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের তুমব্রু সীমান্তে। সীমান্তের এমন পরিস্থিতিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, আমতলী, ফাত্রাঝিরি, চাকমাপাড়াসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয়দের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বিজিবি, বাড়ানো হয়েছে টহল।  

প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া দু’টি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। ৯ সেপ্টেম্বর একে-৪৭ এর গুলি এসে পড়ে তুমব্রু এলাকায়। সর্বশেষ গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি যুবক আহত ও রাতে মর্টার শেলের আঘাতে এক রোহিঙ্গা নিহত ও পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হন। এরপর স্থানীয়দের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।