ঢাকা: সারের কৃত্রিম সংকট ও কারসাজি করলে জরিমানার পাশাপাশি ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। কারসাজি করে সারের দাম বাড়তি নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকেদর প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখন চাষিরা ধান লাগানোর জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তাদের সারও কিনতে হয়। হয়তো ডিলার বলছে গাড়ি আসেনি বা কোনো কারণে আজকে সার নেই, কাল আসেন। কৃষক হয়তো বলেন, না থাকলেও কিছু দাও। তখন চালাকি করে কারসাজি করে দাম বেশি নিচ্ছেন। ডিসি, এসপি, কৃষি কর্মকর্তাদের টেলিফোন করি, সবাই বলে আমাদের এখানে সারের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের গুদামে সারের সংকট নেই, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি সার দিচ্ছি। তারপরও কেন দাম বাড়বে? এখানে আমাদের প্রশাসনের কিছুটা ব্যর্থতা নিশ্চয়ই আছে। দাম বাড়ার তো কোনো কারণ নেই। সংকট নেই, তারপরও দাম বাড়ার সঙ্গে প্রশাসনের লোক জড়িত থাকতে পারেন, সেটাও আমরা দেখছি। খুব শক্তভাবে, কঠোরভাবে আমরা এটি করার চেষ্টা করছি। রংপুর ও বগুড়ায় এটি বেশি হয়েছে, আমরা এগুলো তদন্ত করছি।
সারের কৃত্রিম সংকট ও কারসাজি করলে জরিমানার পাশাপাশি ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, অনিয়মের অভিযোগে চলতি আগস্ট মাসে সারাদেশে ৩৮৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ৩৮৩ জন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীকে ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যশোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ৬০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহে ৩৫টি, নওগাঁয় ৩১টি, ঠাকুরগাঁও ও নড়াইলে ২০টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যারা অনিয়ম করেছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করার।
তিনি বলেন, লাইসেন্স দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। আমরা তাদের কাছে সুপারিশ পাঠাচ্ছি, তারা এটা পরীক্ষা করবে এবং অনেক ডিলারের লাইসেন্স বাতিল হবে বলে আমরা মনে করছি।
দেশে সারের কোনো সংকট নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগস্টে আজকে পর্যন্ত সরকারি- বেসরকারিভাবে আমদানি করা এক লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার দেশে পৌঁছেছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এক লাখ ১৬ হাজার টন সার দেশে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে ৫১ হাজার টন ও অক্টোবর ৭০ হাজার টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। ফলে চাহিদার চেয়ে মজুত অনেক বেশি হবে। চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
বর্তমানে (২৫ আগস্ট) ইউরিয়া সারের মজুত ৬ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডিএপি ৮ লাখ ২৩ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন। সারের বর্তমান মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত) সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন, এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন। বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও সারের বর্তমান মজুত বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
জিসিজি/এসআইএস