ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটে নিহত নারীর ‘কথিত’ স্বামী আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
সিলেটে নিহত নারীর ‘কথিত’ স্বামী আটক

সিলেট: সিলেটে তালাবদ্ধ বাসা থেকে আফিয়া বেগম (৩০) নামে নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা কুটিনা বেগম বাদী হয়ে মহানগরীর শাহপরাণ (র.) থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে এ মামলা (নং-২৭(০৮)’২২) দায়ের করেছেন।

মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত নারীর কথিত স্বামী ইসমাইল নিয়াজ খানকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ৯টায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে আটক করা হয়।

আটক ইসমাইল নিয়াজ খান বরইকান্দি এলাকার ইসমত খানের ছেলে।

মহানগরীর শাহপরাণ (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আমিনুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, মূলত স্বামী ওমান প্রবাসী শোনা গেলেও ইসমাইল নিয়াজ খান প্রবাসে ছিলেন না। তার আরেকটি পরিবার রয়েছে। আফিয়া বেগমকে তিনি বিয়ে করেছেন বললেও তথ্য প্রমাণ মিলেনি। কেবল হুজুর ডেকে তাদের কবুল পড়ানো হয়েছিল, এরপর থেকে সংসার করে আসছিলেন তিনি। তবে নিহতের পিত্রালয়ের সন্দেহ তাকে নিয়ে। যে কারণে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেননা, হত্যাকাণ্ড অন্য কাউকে দিয়েও ঘটানো হতে পারে।

তিনি বলেন, আফিয়া বেগমের আগে বিয়ে হয়েছিল। তার আগের স্বামীর নাম আশরাফ।   তবে বর্তমান নিয়াজ খানের সঙ্গে বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ।

মামলাটি তদন্ত করছেন থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) স্নেহাশীষ পৈত্য। খুব দ্রুতই মামলার রহস্য উন্মোচন সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী।

এদিকে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট)  মধ্যরাতে তালাবদ্ধ ঘরে নারীর বীভৎস মরদেহের পাশ থেকে তার আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

আলৌকিকভাবে বেঁচে থাকা শিশুটি চিকিৎসার পর সম্পূর্ণরূপে সুস্থ রয়েছে। তাকে তার নানি কুটিনা বেগমের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মহানগরের উত্তর বালুচর বাবর তপাদারের মালিকানাধীন ফোকাস-৩৬৪ সিকান্দর মহলের পাঁচতলা ভবনের নিচতলা থেকে আফিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাসাটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। তালা ভেঙে ভেতরে খাটের ওপর নারীর গলিত মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। বীভৎস মরদেহের পাশেই আলৌকিকভাবে মুমূর্ষ অবস্থায় বেঁচে ছিল নিহতের আড়াই বছরের শিশুটি। মৃত ভেবে শিশুটিকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ দেখতে পায় তার দেহে শ্বাসপ্রশ্বাস ওঠানামা করছে। পরে শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠানোর পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই বাসার লোকজন জানান, ওই নারী প্রায় দুই বছর ধরে ওই বাসার নিচতলায় কন্যা সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। কয়দিন ধরে নারীকে কেউ দেখতে পাননি। মঙ্গলবার রাতে বাসা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত আফিয়া গোয়াইনঘাটের জাঙ্গাইল গ্রামের আজির উদ্দিন ও কুটিনা বেগম দম্পতির মেয়ে।

পুলিশ আরও জানায়, নিহত আফিয়া এক নারী চিকিৎসকের বাসার গৃহকর্মী ছিলেন। পরে তাকে আশরাফুল নামে এক যুবকের কাছে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সংসার বেশি দিন টিকেনি। পরে কথিত নিয়াজ খান ওই নারীর সঙ্গে ঘর সংসার করেছেন। যে কারণে তাকে ওখানে ভাড়া বাসায় রাখা হয়েছিল। মাঝেমধ্যে তিনি বা্সায় আসতেন। নিহতের পিত্রালয়ের লোকজনও বিষয়টি জানেন। তাই হত্যার ঘটনায় নিয়াজকে সন্দেহ করছেন তারা।

এদিকে বুধবার ময়নাতদন্তের পর নিহতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।