ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ শুরু হলেও হয়নি শেষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ শুরু হলেও হয়নি শেষ

বরিশাল : নগরের বধ্যভূমি সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর সংযুক্ত সাগরদী খালের ওপর একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয় পাঁচ বছর আগে। সে কাজ এখনও থেমে আছে।

এলাকাবাসী জানেও না কবে শেষ হবে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ!

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে একই বছর অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা ছিল গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ। কিন্তু শ্রমিকরা যেখানে কাজ শেষ করেছিলেন, সেখানেই থেকে আছে ব্রিজ নির্মাণ। গত পাঁচ বছরে কোনো অগ্রগতি হয়নি। নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগও।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক পরিষদের আমলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, বরিশাল নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিশ গোডাউন এলাকার সাগরদী খালের ওপর টাউন প্রোটেকশন বাঁধ সংলগ্ন গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন সিটি মেয়র মো. আহসান হাবিব কামাল। ব্রিজের দুইপাশে কিছু নির্মাণকাজ করা হলেও খালের ওপর ব্রিজের সংযোগ এবং সড়কের সঙ্গে ব্রিজের সংযোগের কাজ শেষ করা হয়নি। এখন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আছে ব্রিজের অংশগুলো।

সিটি করপোরেশনের স্থানীয়রা বলছেন, সাবেক পরিষদ কাজ শুরু করলেও বর্তমান পরিষদ উদাসীন। তারা এ ব্যাপারে কিছু জানাতেও পারেন না। কবে এ ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হবে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

সূত্র বলছে, নগরের নদী বন্দরের পাশ থেকে শুরু হওয়া টাউন প্রোটেকশন বাঁধের কাজটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বধ্যভূমি সংলগ্ন সাগরদী খালের পর থেকে টাউন প্রোটেকশন বাঁধ নদীর ভেতরে গিয়ে নির্মাণ করার অভিযোগ ওঠে। এরপর সাগরদী খালের ওপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অথচ ২০১৮ সালে তৎকালীন পরিষদের মেয়াদকালের মধ্যেই এ প্রকল্পের অনুকূলে বেশিরভাগ টাকা ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাসারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিষদ ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু তারা বলছে, ফান্ড না থাকায় কাজ শেষ করতে পারেনি। প্রকল্পে ভুল ছিল বলেও কাজ শেষ হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ।

এদিকে নদী-খাল-জলাশয় রক্ষা আন্দোলনের নেতারা বলছেন, নদী ভরাট করে বাঁধ ও সেতু নির্মাণ করার কারণে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ একটি রিট করেন। তারপর প্রজেক্টের নকশা সংশোধন না করে কাজই বন্ধ করে দেয় তৎকালীন পরিষদ।

বেড়িবাঁধ ও ব্রিজ নদী ও খালের ভেতরের দিকে নির্মাণের কথা থাকলেও তা না করায় পরিবেশ অধিদপ্তরও আপত্তি জানিয়েছিল। এ দাবি করেন স্থানীয় কাউন্সিলর মজিবর রহমান। পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলেও বরিশালে না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎকালীন কর্মকর্তার কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি।

এ ব্রিজটি নির্মাণ না হলেও চাঁদমারিতে নির্মিত আয়রন ব্রিজটি নদী ও খালের সংযোগ মুখে করায় সেটিও ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল বলেন, চাঁদমারির আয়রন ব্রিজের একপাশে মাটি নেমে যাচ্ছে। আরেক পাশে মাটি এতে নিচে, সেতুতে উঠতে আলাদা দুটি ঢালাই খুটি দিয়েছে স্থানীয়রা। সেতুটি চাঁদমারি কলোনির খেটে খাওয়া কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করেন।

আলাউদ্দিন নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, আয়রন ব্রিজটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, চাঁদমারি অংশের প্রটেকশন দেয়াল অনেক আগেই নদীর ভাঙনের কারণে দেবে গেছে।

এ বিষয় সম্পর্কে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মজিবর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ব্রিজগুলোর সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানান।

বাংলাদেশ সময় : ১৯২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।