ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতুর নাটবল্টু কাণ্ডে গ্রেফতার বায়েজিদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
পদ্মা সেতুর নাটবল্টু কাণ্ডে গ্রেফতার বায়েজিদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক

পটুয়াখালী: পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাটবল্টু খুলে টিকটিক ভিডিও করায় সারাদেশে ব্যাপক সমালোনা ও পুলিশের হাতে আটক বায়েজিদ তালহা মৃধার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চলছে বিতর্ক।

রোববার (২৬ জুন) রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

বর্তমানে বায়েজিদ রিমান্ডে আছেন। তবে বায়েজিদের বিগত দিনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। সরকার দলীয় বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এমন কিছু ছবি ও খবর ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়।

এদিকে বায়েজিদের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিও ভাইরাল হয়েছে। যেটি এখন আলোচনার তুঙ্গে। তবে কোনো দলই নিচ্ছে না বায়েজিদের রাজনৈতিক পরিচয় ও দায়ভার। এক দল অপর দলকে তাদের কর্মী হিসেবে গছিয়ে দিচ্ছে।

জানা গেছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের তেলিখালী গ্রামের নির্মান শ্রমিক মো. আলাউদ্দিন মৃধার ছোট ছেলে মো. বায়েজিদ তালহা মৃধা। বায়েজিদ স্থানীয় গাবুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পটুয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চতর শিক্ষা জীবন নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত আছেন। তবে বায়েজিদ ঢাকায় থাকায় স্থানীয়ভাবে তেমন পরিচিত নয়। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে গ্রামের বাড়ি আসলেও দুই-একদিন থেকে আবারও ঢাকায় ফিরে যেতেন।

বায়েজিদ বিতর্কে কেউ কেউ বলছেন বায়েজিদ একসময় ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এরপরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বায়েজিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হয়। এটি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।

প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, বায়েজিদ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এমপির সঙ্গে একটি বাসভবনে সেলফি তুলছেন। আরেকটি ছবিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বায়েজিদ। আরও এক ছবিতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের পটুয়াখালী পিডিএস মাঠ সংলগ্ন বাসার সামনে একটি সাইনবোর্ডের পিছনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সঙ্গে ফ্রেমবন্দি। এছাড়া ঢাকার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর ছবিও ভাইরাল হয়।

এর বাইরে আরও কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে একটি সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেলফিতে বায়েজিদ। অপর দুইটি ছবিতে বায়েজিদ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের গলায় হাত দিয়ে সেলফি তুলছেন।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লব বলেন, বায়েজিদ ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। বায়েজিদ ঢাকা কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এবং সেখানেই ছাত্রলীগ করতো। ছাত্রদল করার প্রশ্নই আসে না। এমনকি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ছবিও ভাইরাল হচ্ছে।

তবে বায়েজিদ আমার এলাকার ছোট ভাই হিসেবে ছবি তুলছে। তার সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই বলেও জানান তিনি।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি হাসান শিকদার বলেন, বায়েজিদ কখনও আমাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ করেনি। কোনো মিছিল মিটিংয়েও দেখিনি। বরং তিনি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিপ্লব গাজীর সঙ্গে ছাত্রদল করতেন। তাকে ছাত্রদলের মিছিল মিটিংয়েও দেখেছি। ফেইসবুকে দেখলাম বিপ্লব গাজীর সঙ্গে বায়েজিদের ঘনিষ্ঠতার ছবিও ভাইরাল হয়েছে।

বায়েজিদের ভাবি হাদিসা আক্তার ও চাচি ফরিদা বেগম বলেন, বায়েজিদ শান্তশিষ্ট একজন ছেলে। বাড়িতে আসলে নিকট আত্মীয় ছাড়া তেমন কারও সঙ্গেও মিশতো না। টিকটকে আসক্ত হয়ে এমন একটি খারাপ করে ফেলছে। তার বিষয়ে সুবিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।