ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, বর্ণিল আলোকসজ্জায় উৎসবমুখর হাতিরঝিল

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, বর্ণিল আলোকসজ্জায় উৎসবমুখর হাতিরঝিল

ঢাকা: অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হলো। উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মাসেতুর।

দক্ষিণাঞ্চলের একুশটি জেলার মানুষের যোগাযোগ, জীবিকায় সরাসরি প্রভাব ফেলবে এই সেতু। উদ্বোধনের উচ্ছ্বাস ইতোমধ্যে ছড়িয়েছে দেশব্যাপী। মাওয়া, জাজিরা প্রান্তের পর এর কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী ঢাকা।

শনিবার (২৫ জুন) রাজধানীর, রামপুরা, হাতিরঝিল, পুলিশ প্লাজা, গুলশান এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।  
হাতিরঝিল এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলোয় করা হয়েছে মরিচবাতির আলোকসজ্জা, রামপুরা জেটি ঘাট, পুলিশ প্লাজা, গুলশান, এফডিসি জেটি ঘাটে রংবেরঙের বেলুন উড়তে দেখা গেছে। ব্যানার, ফেস্টুনে সয়লাব হয়ে গেছে সমস্ত এলাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্লাসভর্তি পানির মধ্যে রঙের ছড়িয়ে যাওয়ার মতো করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে আনন্দ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতুর প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগী হলেও, প্রতিটি অঞ্চলের মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সুফলভোগী হবেন পদ্মা সেতুর।

কেউ হয়তো চাকরিসূত্রে উত্তর প্রান্ত থেকে দক্ষিণে থাকেন, কারো ব্যবসার সূত্রে যেতে হয়, কারোবা আত্মীয়-স্বজন থাকেন। বলার অপেক্ষা রাখে না এমন মানুষ আছেন অসংখ্য। যারা দক্ষিণ অঞ্চলের বাসিন্দা না হয়েও হবেন সুবিধাভোগী।

উদ্বোধনী প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নিকেতন এলাকার আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, সুন্দরবনে যাওয়ার ইচ্ছে অনেকদিনের। কিন্তু ফেরি পার হয়ে যাওয়াটা অনেক ঝামেলার এবং ভয়ের ছিল। এখন তো সেতু হয়ে গেছে। অনেক সহজে যাওয়া যাবে। আমি খুবই আনন্দিত। বন্ধুরাসহ আগামী মাসের শুরুর দিকেই যাব।

কথা হয়, রামপুরা এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী ওয়ালিদের সঙ্গে। জানালেন, তার গ্রামের বাড়ি খুলনার কয়রা উপজেলায়। বাড়ি যেতে আগে সীমাহীন বিড়ম্বনায় পড়তে হত। তিনি বলেন, আগে একটু আবহাওয়া খারাপ হলেই এমনও সময় গেছি ২ দিন ফেরি ঘাটে পড়ে ছিলাম। বাড়িতে যোগাযোগ ছিল না। সবাই অনেক চিন্তায় থাকত।  
আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, এখন সে সমস্যা আর রইল না। এটা আমাদের অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশাল ব্যাপার। আমি প্রধানমন্ত্রীসহ নির্মাণ, সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, আজ (২৫ জুন) বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রী ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সেতুর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতির পাশাপাশি তৈরি হবে নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা। যার, ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সেতু তৈরী হওয়ার ফলে ঢাকায় যে জনসংখ্যার চাপ রয়েছে সেটি কমবে। এতে, ঢাকা আরও বাসযোগ্য হয়ে ওঠবে। হবে কাঙ্ক্ষিত বিকেন্দ্রীকরণ।

সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এবং আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে এই সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে এমনটিই আশা করছেন সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ।

উদ্বোধন উপলক্ষে ৬ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা থেকে হাতিরঝিলের ভাসমান মঞ্চে। এতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি প্রদর্শনী, ড্রিম-শো, লেজার লাইটের প্রদর্শনীসহ নানান আয়োজন থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, ২৫ জুন, ২০২২
এমকে/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।