ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সাঁতার প্রতিযোগিতা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয় তেরখাদার দ্বীন ইসলাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
সাঁতার প্রতিযোগিতা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয় তেরখাদার দ্বীন ইসলাম

খুলনা: খুলনার তেরখাদার ১১ বছরের শিশু দ্বীন ইসলাম হত্যার রহস্য তিন বছর পর উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে আটকের পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

রোববার (১০ এপ্রিল) দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পিবিআই’র পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দুপুরে পাচজন যুবকের সঙ্গে মুলিশিয়া খালে গোসল করার সময় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দ্বীন ইসলাম। এতে দ্বীন ইসলাম ষষ্ঠ হলে অন্যরা তাকে বিদ্রুপ করে। তখন সে তাদের গায়ে কাদা ছুড়ে মারে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট ছুড়ে মারলে দ্বীন ইসলামের মাথায় লাগে এবং সে পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে মারা যায়।  

পিবিআই জানায়, খুলনার তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর গ্রামের আজিজুর রহমান শেখের ছেলে দ্বীন ইসলামকে ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দুপুরে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় মাইকিং করেন। পরে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় মুলিশিয়া খালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার বাবা আজিজুর রহমান শেখ তেরখাদা থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন।

পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মাথায় আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তখন তার পরিবারের সদস্যরা হত্যা মামলা করতে রাজি হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তেরখাদা থানার এস আই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর পিবিআই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।

পুলিশ সুপার জানান, সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মুছা শেখ (২৭) ও মো. হানিফ শেখ ওরফে রমজান শেখকে (২১) আটক করে। মুছা লস্করপুর গ্রামের মো. কালন শেখের ছেলে এবং হানিফ একই গ্রামের ইমলাক শেখের ছেলে। ইতোমধ্যে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের জড়িত আরও তিনজনের নাম প্রকাশ করেছে।

এ ঘটনায় জড়িত লস্করপুর গ্রামের উতার আলী সরদার (২৪) ও ফেরদৌস শেখকে (২৪) এক বছর আগেই আটক করা হয়েছিল। তবে রিমান্ডে নেওয়া হলেও তখন তারা হত্যার কথা স্বীকার করেনি। এ ঘটনায় জড়িত লস্করপুর গ্রামের আলাল সরদারের ছেলে হানিফ সরদার (২১) এখনও পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানান, মুছা শেখ ও হানিফ শেখ এলাকা ছেড়ে তিন বছর চট্টগ্রামে পালিয়ে ছিল। গ্রেফতার এড়াতে তারা মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতো না। মাঝেমাঝে অন্যের ফোন দিয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করতো।  

প্রেস ব্রিফিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর হযরত আলী জানান, নিহত দ্বীন ইসলাম খালে-বিলে মাছ ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী ফল বিক্রি করতো। শিগগিরই এই হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত হানিফ সরদারকে আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
এমআরএম/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।