ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২২
রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবি

ঢাকা: কয়লাভিত্তিক রামপাল প্রকল্প বাতিল করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্ক (বেন)।

বাপা-বেন আয়োজিত ২০২২ সালের ‘জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন’ বিষয়ক বিশেষ সম্মেলনে গৃহীত চূড়ান্ত প্রস্তাব প্রকাশ করতে শুক্রবার (৪ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠন দুটি।

লিখিত প্রস্তাবনায় সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সরকার রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেনি এবং এটিকে কয়লা থেকে গ্যাসে রূপান্তরের প্রস্তাবও করেনি। সম্মেলন এ বিষয়ে জোরালো অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছে এবং রামপাল প্রকল্প বাতিল করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করছে। ’

এতে আরও বলা হয়, ‘সুন্দরবন একটি বিশ্ব ঐতিহ্য, উপকূলীয় প্রাণ ও সম্পদ রক্ষাকারী প্রাকৃতিক সুরক্ষা বলয়। সুন্দরবনের ক্ষতি হয় এমন যেকোনো প্রকল্প থেকে দূরে থাকতে হবে। যেকোনো মূল্যে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে। ’

‘উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত অন্যান্য সাধারণ সার্বজনীন মূল্যমান সম্পন্ন বাস্তুসংস্থানখ্যাত সুন্দরবন সুরক্ষার দাবি জানানো হচ্ছে এবং অন্যান্য উপকূলীয় বনাঞ্চল ও মৎস্য সম্পদের অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃত উপকূলীয় পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করার দাবি জানানো হচ্ছে। ’

প্রস্তাবনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা ২০৪১ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার যে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছে তার যথাযথ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানানো হয়।

একইসঙ্গে সৌর বিদ্যুৎ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর আরও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠন দুটি।

সরকার অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘সরকারি খাতেও আর্থিক স্থায়িত্বশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নসাপেক্ষ প্রকল্প গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে মাত্র ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রূপপুর আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে সম্মেলন উদ্বেগ প্রকাশ করে। সম্মেলন লক্ষ্য করে যে, অনেকের মতে অন্যান্য দেশে অনুরূপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র আরও অনেক কম বাজেটে নির্মিত হয়েছে। ’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কেন বাজেট বেশি হলো তা ব্যাখ্যার আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘কেন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর বাজেট এত বেশি হলো তা ব্যাখ্যার জন্য সম্মেলন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সম্মেলন আরও লক্ষ্য করে যে, এত বড় বাজেটের একটি প্রকল্প তেমন কোনো গণআলোচনা ছাড়াই সরকার গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়নে এগিয়ে যায়। সরকার দ্বিতীয় একটি আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। সম্মেলন আশা করে যে, এটার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত গণআলোচনা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সরকারি খাতে দুর্নীতি, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার হ্রাস জ্বালানি খাতের আর্থিক স্থায়িত্বশীলতা অর্জনে সহায়ক হবে’।

সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনা পাঠ করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শরীফ জামিল।

সভাপতিত্ব করেন বাপার সহ-সভাপতি ও বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাপার সহ-সভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ, বাপার যুগ্ম সম্পাদক শারমীন মুরশিদ, নির্বাহী সদস্য এমএস সিদ্দিকী, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, লাইফ অ্যান্ড নেচার সেফগার্ড প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও শমসের আলী, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বিশেষজ্ঞ সেশন সাব-কমিটির সহ-আহ্বায়ক ও বেনের অন্যতম সদস্য প্রফেসর আহমেদ বদরুজ্জামান এবং সাধারণ অধিবেশন সাব-কমিটির সহ-আহ্বায়ক ও বেনের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২২
এমইউএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।