ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় গণধর্ষণ ভার্সিটি ছাত্রীকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় গণধর্ষণ ভার্সিটি ছাত্রীকে গোপালগঞ্জে গণধর্ষণে আটক ৬ আসামি

ঢাকা: গোপালগঞ্জ সদরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে আলোচিত গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালয়িন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতাররা হলেন- রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), মো. নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪) ও তূর্য মোহন্ত (২৬)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গণধর্ষণে নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তারা।

র‌্যাব জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুকে আগে থেকেই ফলো করছিল ৫ জন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জের হেলিপ্যাডের সামনে থেকে নিজ মেসে যাওয়ার সময় গ্রেফতাররা মেয়েটিকে ইভটিজিং করে। এ সময় ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুর সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়।

একপর্যায়ে বখাটেরা ভিকটিমের বন্ধুকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে পাশের একটি ভবনে নিয়ে যায়। এরপর তারা পালাক্রমে ভিকটিমকে ধর্ষণ ও তার বন্ধুকে ব্যাপক মারধর করে।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এ ঘটনায় সদর দপ্তরের নজরদারির ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে রাকিবের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি অপরাধ চক্রের সদস্য গ্রেফতারকৃতরা। তারা সবাই গোপালগঞ্জ ও আশপাশের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। প্রায় ৮/১০ বছর ধরে নবীনবাগের বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন, আড্ডা, জুয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত। এছাড়া তারা চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়িত ছিল।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাটে স্কুল/কলেজের ছাত্রীদের উত্যক্ত করত। তাদের নামে থানায় মামলাও রয়েছে।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত রাকিব মিয়া ওরফে ইমন স্থানীয় একটি মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে রিসেপশনিস্ট হিসেবে চাকরি করতেন। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে মাদক ও মারামারির মামলা রয়েছে।

আর পিয়াস ফকির গোপালঞ্জের একটি পাওয়ার হাউজে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। প্রদীপ বিশ্বাস স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপাড়ার পর গোপালগঞ্জে হোম সার্ভিসের মাধ্যমে এসি ও ফ্রিজ মেরামতের কাজ করতেন।

নাহিদ রায়হান স্থানীয় একটি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। হেলাল স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার হিসেবে চাকরি করতেন।

তূর্য মোহন্ত খুলনার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৮ সালে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। পরবর্তীতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার জন্য বিদেশ যান। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে দেশে চলে আসেন এবং গোপালগঞ্জে সদরে গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে একটি মারামারির মামলা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।