ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ 

গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে উদ্বোধন করা হয়েছে সুবিধাভোগী নারীদের উৎপাদিত পণ্যের ব্রাইন্ডিং। এতে এখানে বসবাসকারী পরিবারের নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপশি, আর্থিক স্বচ্ছলতা আসবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসন।

কোটালীপাড়ার দেবগ্রামে ভূমিহীন পরিবারগুলোর জন্য গড়ে তোলা হয় আদর্শ আশ্রয়ণ প্রকল্প। মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক ভূমিহীন পরিবারের। এ প্রকল্পে রয়েছে বই পড়ার জন্য লাইব্রেরি, শিশুদের জন্য খেলার সরঞ্জামসহ মাঠ। এবার এখানকার আশ্রিত নারীদের জন্য সৃষ্টি করা হলো কর্মসংস্থানের সুযোগ। মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্সের উদ্যোগে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প চত্বরে সুবিধা বঞ্চিত নারীদের উৎপাদিত পণ্যের ব্রাইন্ডিং উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।  

জেলা প্রশাসন ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্স সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের অসহায় কর্মহীন ৫৪ জন নারীর আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এসব হস্তশিল্পের মধ্যে রয়েছে মাফলার, বিছানার চাদর, থামি (লুঙ্গি) ও বউ টুপি। প্রশিক্ষণার্থীরা ইতোমধ্যে ৭৪ পিস মাফলার, ৩০ পিস চাদর ও ৯৬ পিস বউ টুপি তৈরি করেছেন। প্রতিটি মাফলার ৫০০, চাদার ১ হাজার ও বউ টুপি ৩০০ টাকা দরে এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে উৎপাদনকারী নারীরা পারিশ্রমিক হিসেবে মাফলারের জন্য পাচ্ছেন ২০০ টাকা। চাদরের জন্য পাচ্ছেন ৪০০ টাকা আর টুপির জন্য পাচ্ছেন ১০০ টাকা করে। হস্তশিল্পে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন কোটালীপাড়ার মেয়ে ক্রিস্টিনা দাস নদী এবং বান্দরবানের দিপ্তি রানী ত্রিপুরা ও আলনতি ত্রিপুরাসহ ৫ জন।

প্রশিক্ষকরা জানান, অসহায় ও দরিদ্র নারীদের তারা ট্রেনিং দিতে পেরে খুশি। কেননা তারা এখন থেকে স্বাবলম্বী হতে পারবে। নিজেদের প্রয়োজনে সংসারে টাকা খরচ করতে পারবে।  

আশ্রয়ণ প্রকল্পের নাজমা বেগম, শরীফা বেগম ও মিতালী হালদার জানান, প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্রয়স্থল দিয়েছেন। আবার আয়বৃদ্ধির জন্য মাফলার, চাদর ও টুপি বুনানোর জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। আগে আমাদের খুব খারাপ দিন গেছে। এখন আমাদের থাকার জায়গা হয়েছে, সেই সঙ্গে সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য আয়ের সুযোগও হয়েছে। এখন থেকে আমরা সংসারে স্বামীর পাশাপাশি রোজগার করে সংসারের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারবো। তারা এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্সের হেড অব প্রোগ্রামস্ মার্ক রিপন সরকার জানান, সুবিধাবঞ্চিত এসব নারীদের বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্সের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। যাতে এসব নারীরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারবেন। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে পরিবারগুলো।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, এসব পণ্যের স্থানীয় বাজার সৃষ্টি ও অনলাইনে বিক্রি করাসহ যাতে বিদেশে রপ্তানি করা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। কেননা এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের নারীরা যে পণ্য তৈরি করেছেন তা বিশ্ব বাজারে বিক্রির মতো গুণগত মান সম্পন্ন। তারা যে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করছে তাতে তাদের জীবনমান একটা পর্যায় আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।