দেশে এখনও একটি টেকসই ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেছেন, দেশের যে পরিস্থিতি তাতে মানুষ এখন টেকসই, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক সমাজে উত্তরণ ঘটাতে চায়।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পার হলেও বাংলাদেশ এখনও এমন একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে পারেনি, যা জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। ফলে বর্তমান বাস্তবতায় কিছু সীমিত ও মৌলিক লক্ষ্য অর্জনই এখন মূল ফোকাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থবহ ও জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র অপরিহার্য। এজন্য স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, শক্তিশালী সংসদ এবং সুশাসন নিশ্চিতকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা ছাড়া সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বাজারভিত্তিক অর্থনীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসা সম্ভব না হলেও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো নিশ্চিত করা যে এই বাজারব্যবস্থা যেন ন্যায্যতা ও সামাজিক সমতা বজায় রাখে।
অধ্যাপক মাহমুদের মতে, সফল গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটলে নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় সূচিত হবে। তখন রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের মতাদর্শ ও অবস্থান নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে—কেউ বাম, ডান না মধ্যপন্থায় অবস্থান করছে তা স্পষ্ট করতে হবে।
সেমিনারে উপস্থিত অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার অর্থনীতি আগ্রাসী পুঁজিবাদ সৃষ্টি করতে পারে, যা গভীর সামাজিক বৈষম্যের জন্ম দেয়। তাই আয়ের ও ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করাই ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল শর্ত।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ. কে. এনামুল হক।
আলোচক প্যানেলে ছিলেন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সেলিম রশিদ, বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম।
এসএমএকে/এএটি