ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তারা এই পরামর্শ দেন।
সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা: রাজনৈতিক ও নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিজিএসের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান কামাল আহমেদ।
এছাড়া আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস. এম. শামীম রেজা, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, জি-৯ এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কাফি রতন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, সাংবাদিক কাজী জেসিন, জায়মা ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জিল্লুর রহমান বলেন, সংস্কার নিয়ে অনেক কথা হলেও ২০০৭-০৮ সালের ওয়ান-ইলেভেনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি উল্লেখ করেন, সংস্কারের বয়ান প্রায়শই প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে, বাস্তবে তা পৃষ্ঠা উল্টে দেখার প্রচেষ্টা কমই দেখা গেছে।
জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বে বলা হতো, নির্বাচনের আগে সংস্কার অপরিহার্য। বর্তমানে দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে সিংহভাগ সংস্কার প্রায় সম্পন্ন। প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ভাষণে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। দেশকে গণতান্ত্রিক করার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে জোর দেওয়া হয়। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থা, জাতিসংঘ এবং আর্টিকেল ১৯-এর মতে, বাংলাদেশে মতপ্রকাশের পরিবেশ এখনো নিরাপদ নয়। এই সংস্কার ও গণতন্ত্রের অগ্রগতি নিয়ে সব পক্ষের সহযোগিতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
মাহফুজ আলম বলেন, গত দুই মাস ধরে চাকরির অনিশ্চয়তায় উদ্বিগ্ন, যা সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের মতো উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি জানি না আমার গদি কালকে থাকবে কি না।
তিনি জানান, আইনের ১৮টি খসড়া তিনি পেয়েছেন এবং দুই মাস আগে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু এটি এখনো দ্বিতীয় ধাপে আটকে আছে। তিনি বিশ্বাস করেন, স্বল্প সময়ে এই আইন করা সম্ভব।
তিনি মিডিয়া সংস্কারের জন্য বিটিভি ও বেতারকে একীভূত করে স্বায়ত্তশাসিত করার পরিকল্পনার কথা বলেন। কিন্তু কর্মী সমন্বয় ও স্টেকহোল্ডারদের প্রভাবে জটিলতা দেখা দিয়েছে জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, মন্ত্রণালয়ে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান স্টেকহোল্ডাররা সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে।
বিজ্ঞাপনের হার বৃদ্ধিতে মিডিয়া হাউস মালিকরা লাভবান হলেও সাংবাদিকদের প্রকৃত সুবিধা প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকরা আসলে কী পাচ্ছে? মালিকদের কাছে এর উত্তর নেই।
তার সময়ে কোনো মিডিয়া হাউজ বন্ধ হয়নি, তবে ৭২-৭৫ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন, যার সমাধানে তিনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছেন বলে জানান উপদেষ্টা। নতুন মিডিয়া লাইসেন্স দেওয়া হয়নি বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।
প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সচিবালয় চালাতে সচিব লাগবে, সাধারণ মানুষ দিয়ে মন্ত্রণালয় চলবে না।
তিনি সিভিল-মিলিটারি ব্যুরোক্রেসি ও কর্পোরেট সমাজের শক্তিশালী নেক্সাসের কথা বলেন, যা তার মতে, ‘ভাঙা কঠিন’।
কামাল আহমেদ গণমাধ্যমের সুরক্ষা, আইনি সংস্কার ও পেশাদারিত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন ২০২৫’ ও ‘গণমাধ্যম কমিশন আইন’-এর জন্য জনমত সংগ্রহ এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশের সুপারিশ করেন। ছয় মাস আগে রিপোর্ট জমা দেওয়া সত্ত্বেও সাংবাদিক সুরক্ষা অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি সাংবাদিকদের শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করে তাদের বেতন কাঠামো শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি, ওয়েজ বোর্ড সংস্কার এবং বাংলাদেশ বেতার, বিটিভি ও সংবাদ সংস্থাকে এক বোর্ডের অধীনে আনার প্রস্তাব করেন।
অপর্যাপ্ত অর্থায়ন ও মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে বিটিভি ও বেতারের অকার্যকারিতার সমালোচনা করে তিনি উদাহরণ দেন, সংবাদ সংগ্রহের জন্য ভ্যান পাঠাতে ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন হলেও তা অনুপলব্ধ। তিনি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংস্কার বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সিটিজেন জার্নালিজমে পেশাদারিত্বের জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মার খাওয়া বা অস্ত্র হাতে দেখার ঘটনা সাংবাদিকতা না চাঁদাবাজি/রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিনা তা যাচাই প্রয়োজন। পুরনো লাইসেন্স পর্যালোচনা বা বাতিলের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের তাগিদ দেন কামাল আহমেদ।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি মিডিয়া লাইসেন্সের গুণগত মানের ওপর জোর দেন এবং গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানান। তিনি স্বনিয়ন্ত্রণকে ‘সেল্ফ রেগুলেশন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’র সঙ্গে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও মতামতের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
এস. এম. শামীম রেজা বলেন, গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা কমছে, তবে এ বিষয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গবেষণার অভাব রয়েছে। মিডিয়া হাউজগুলো গবেষণায় অনীহা দেখায় এবং ঢাকা-কেন্দ্রিক হওয়ায় আঞ্চলিক পর্যায়ে মনিটরিং ও তত্ত্বাবধানের ঘাটতি রয়েছে।
তিনি ভালো সাংবাদিকতার মান যাচাই, সংবিধানের মতো গণমাধ্যম সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার অভাব এবং গণতান্ত্রিক সমাজে স্বনিয়ন্ত্রিত ঐতিহ্য ও নীতিমালা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
শামীম রেজা বলেন, নীতি বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ, প্রশিক্ষণ, এবং সমান সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মান মেনে নীতি বাস্তবায়ন করলে স্বাধীন কাজের পরিবেশ তৈরি হবে।
তিনি সাংবাদিকদের চাকরির নিরাপত্তা, আইনি ও আর্থিক সুরক্ষা, বিশেষত নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে এ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল গণমাধ্যমের ভূমিকা, নীতি, এবং দায়িত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি পেশার মতো সাংবাদিকতারও নির্দিষ্ট নীতি ও ঝুঁকি রয়েছে। সাংবাদিকদের উচিত নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করা এবং রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করার প্রত্যয় থাকা। তবে, দুর্ভাগ্যবশত, গত সরকারের আমলে গণমাধ্যম ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে, যা জনগণের স্বার্থের পরিবর্তে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করেছে।
ডা. পাভেল আরও উল্লেখ করেন, গণমাধ্যমের এই ভূমিকার কারণে জনগণের আস্থা হ্রাস পেয়েছে, এবং তারা গণমাধ্যমের পরিবর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট বা কার্টুন প্রকাশিত হলে গণমাধ্যম তা থেকে সংবাদ তৈরি করে, যা তাদের সৃজনশীলতার অভাবকে প্রকাশ করে।
এ প্রসঙ্গে তিনি দলের কার্যকরী সভাপতিকে নিয়ে প্রকাশিত একটি কার্টুনের কথা উল্লেখ করেন, যা দল সাদরে গ্রহণ করেছে এবং এর মাধ্যমে দলের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। ডা. পাভেল আশা প্রকাশ করেন যে, গণমাধ্যম তাদের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব পুনরুদ্ধার করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনবে।
অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গণমাধ্যমের সম্মান ও স্বচ্ছতার বিষয়ে বলেন, আমাদের সমাজের বর্তমান অবস্থা এতটাই জটিল যে গণমাধ্যমকে তার প্রাপ্য সম্মানের জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সমাজে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন এবং সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের সম্মান প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
অ্যাডভোকেট জুবায়ের আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে স্বচ্ছ কার্যপ্রণালী ও সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করা। এটি কেবল বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না, বরং বাস্তবায়নের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। তিনি বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর এই প্রতিশ্রুতি ও স্বচ্ছতা গণমাধ্যমের মর্যাদা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নাজমুল হক প্রধান সোশাল মিডিয়ায় মত প্রকাশের পর আক্রমণের প্রবণতা থামানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন, পাশাপাশি মিডিয়া বিজ্ঞাপনের ভিত্তি এবং সাংবাদিকদের ক্ষমতার লোভ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এছাড়া, কার্টুনকে গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেন।
নাজমুল হক প্রধান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো মত প্রকাশ করলেই তাৎক্ষণিকভাবে তীব্র আক্রমণের শিকার হওয়ার প্রবণতা থামানোর উপায় চিন্তা করা উচিত। এই ধরনের আক্রমণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন বিতরণের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা দরকার। আগের সরকারের আমল থেকে বর্তমান সরকারের আমল পর্যন্ত, এমন অনেক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় যেগুলো কেউ পড়ে না। তাহলে এই বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য কী? এটি মিডিয়া শিল্পের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর চিন্তার দাবি রাখে।
কার্টুনকে গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বর্ণনা করে নাজমুল হক প্রধান বলেন, কার্টুন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের জন্য অবশ্যই একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি আরও যোগ করেন, সমাজের সবাই ক্ষমতায় যাওয়ার প্রবণতা দেখায়, এমনকি সাংবাদিকদের মধ্যেও এই প্রবণতা লক্ষণীয়। টাকা-পয়সার লোভে অনেকে ক্ষমতার পেছনে ছোটেন। তবে এই ক্ষমতার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার, যাতে গণমাধ্যমের সত্যিকারের ভূমিকা পালন করা যায়।
আবদুল্লাহ আল কাফি রতন সাংবাদিকদের বেতন নিয়ে কটাক্ষের সমালোচনা করে জানান, এ ধরনের মন্তব্য সাংবাদিকদের মর্যাদাহানি করে এবং তিনি এতে গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি প্রযুক্তি সংক্রান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পেগাসাসের মতো টেকনোলজি মানুষের স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
তিনি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কাছে এই প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করার জন্য জোরালো অনুরোধ জানান।
এম আব্দুল্লাহ্ বলেন, ক্ষমতার চাপে সাংবাদিকরা স্বনিয়ন্ত্রণ বা সেলফ-সেন্সরশিপের দিকে ঝুঁকছেন, যা গণমাধ্যমের জন্য একটি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি।
তিনি সাংবাদিকদের ওপর জেল-জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদ করে আসছেন জানিয়ে বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ৬১ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। এছাড়া, ৫ আগস্টের পর সাংবাদিকদের ওপর হয়রানির ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয়ে তিনি তৎকালীন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এবং হয়রানিমূলক মামলার সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জানিয়ে বলেন, এই কমিটির মাধ্যমে ৭৮ জন সাংবাদিকের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করা হয়েছে। আবদুল্লাহ জোর দিয়ে বলেন, ২৬৬ সংখ্যাটি ভিত্তিহীন এবং তিনি এর সত্যতা অস্বীকার করেছেন।
কাজী জেসিন বলেন, ৫ আগস্টের পর একটি বিপ্লবী পরিবর্তনের সুযোগ ছিল, যা গণমাধ্যমকে পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট শাসনের পাপ থেকে মুক্ত করতে পারতো। সাংবাদিকরা নাগরিক এবং ভোটার হিসেবে তাদের মতামত থাকতে পারে, তবে তাদের পক্ষপাতমুক্তভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট শাসনে ‘রাজাকার’ বলা হতো, এখন ‘নাস্তিক’ বা ‘ধর্মবিদ্বেষী’ বলা হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতার অভাব রয়েছে। স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে সবার মতামত শুনতে হবে এবং সহনশীলতা বজায় রাখতে হবে। এই সহনশীলতা না থাকলে ভবিষ্যতে আমরা বিপদের দিকে যেতে পারি।
টিআর/এইচএ/