ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

গবাদি প্রাণীতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মানব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৪, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
গবাদি প্রাণীতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মানব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: উপদেষ্টা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

গবাদি প্রাণীতে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে ব্যাকটেরিয়াসমূহে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, মানুষ ও গবাদি প্রাণী পাশাপাশি বসবাস করলে প্রাণিসম্পদে ক্ষতিকর কিছু ব্যবহার করা হলে তা মানুষের শরীরেও প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সৈয়দপুরের ইক্যু হেরিটেজ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন ও কর্মশালা-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় জাতের মুরগি হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশ ভৌগোলিক বৈচিত্র্যময় একটি দেশ, তাই প্রতিটি অঞ্চলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে অঞ্চলভিত্তিক ক্ষতির কারণ শনাক্ত করে সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।  

তিনি আরও বলেন, দেশীয় মুরগির পাশাপাশি হাঁসের ডিমের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য শুধু খাদ্য উৎপাদনে নয়, ফিড ইন্ডাস্ট্রিতেও আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। বাইরে থেকে খাদ্য তৈরির উপকরণ আমদানি করতে হলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

এর আগে বিএলআরআই আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিদর্শনকালে গরুর মাংস আমদানির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে মাংস উৎপাদনে নিয়োজিত খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার সর্বদা সচেষ্ট। দেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না।

এ ছাড়া বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) স্বাদুপানি উপকেন্দ্র পরিদর্শনকালে ফরিদা আখতার বলেন, হারিয়ে যাওয়া মাছ ফিরিয়ে আনার জন্য গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সঠিক খাদ্যব্যবস্থাপনা ও উপযুক্ত কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে এসব মাছের প্রজাতি সংরক্ষণ সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের।  

তিনি বলেন, খাবারের দাম বাড়লে পোল্ট্রি ও ডিমের দামও বাড়বে। তাই কম খরচে খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা জরুরি। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে এবং খাত সংশ্লিষ্ট জনবলের প্রশিক্ষণে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা বাড়ছে। উৎপাদন বাড়াতে হলে গবেষণার বিকল্প নেই। দেশীয় সম্পদকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিএলআরআই গবেষণা চালিয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতে স্থানীয় জাত সংরক্ষণ ও খাদ্য উৎপাদন খরচ কমাতে কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র।

স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএলআরআই পোল্ট্রি রিসার্চ সেন্টারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, দপ্তর প্রধান এবং ‘পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্প’-এর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. সাজেদুল করিম সরকার। কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বিএলআরআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন।

জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।