ঢাকা: নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের আগে উত্তেজিত জনতা তাকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘রোববার (২২ জুন) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় রাজধানীর উত্তরা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এসময় ‘মব’ কর্তৃক সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও অভিযুক্তকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
সরকার দেশের সকল নাগরিকের প্রতি আবারও আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে। অভিযুক্ত সকল ব্যক্তির বিচার দেশের আইন মেনে হবে এবং বিচারাধীন বিষয় ও ব্যক্তির ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। ’
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল নাগরিককে সহনশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ ও তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থি ও ফৌজদারি অপরাধ। মব সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সকলকে চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ’
রোববার রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাবেক সিইসিকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, নুরুল হুদা বর্তমানে ডিবির হেফাজতে রয়েছেন নিশ্চিত করেছেন
উল্লেখ্য, সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনেই ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে ফেলার অভিযোগে ‘নিশি রাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
এদিকে ওই নির্বাচনের জালিয়াতির অভিযোগে বিএনপির পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তিনজন সাবেক সিইসি- কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ, কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং কে এম নুরুল হুদা, বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ ও সাবেক চার আইজিপি- হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক এবং সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি মো. ইমাউল হক জানান, মামলায় অভিযোগকারীরা বলেছেন, অভিযুক্তরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থাকার পরও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছেন এবং জনগণের ভোট ছাড়া প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেছেন, যা দণ্ডনীয় অপরাধ।
এসকে/এমইউএম/আরআইএস/এমজে