ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফরিদপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি-গাছপালা বিধ্বস্ত, বন্ধ বিদ্যুৎ সংযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৪
ফরিদপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি-গাছপালা বিধ্বস্ত, বন্ধ বিদ্যুৎ সংযোগ

ফরিদপুর: কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফরিদপুরের কয়েকটি গ্রামে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকান-পাট বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে শতাধিক গাছপালা।

অনেক জায়গায় বাড়ির বিদ্যুতের মিটার ও চালের টিন উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়ে। কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় গাছপালা পড়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছপালা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছেন। ঝড়ের পর থেকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলাসহ অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কালবৈশাখীর এ তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে।  

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, মাইটকুমরা, শেখপুর, ছত্তরকান্দা, রূপাপাত ইউনিয়নের কুমরাইল, কাটাগড়, কলিমাঝি, পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া, জয়পাশা, তামারহাজি। অন্যদিকে, আলফাডাঙ্গা উপজেলার টাবনি, হেলেঞ্চা, পাড়াগ্রাম, বানা, বারাংকুলা, চরডাঙ্গা এলাকায় ঘরবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  

প্রত্যক্ষদর্শী সহস্রাইল গ্রামের তারেক আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি জানান, বাড়ি থেকে বাজারের দিকে জরুরি ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে বাতাস শুরু হলে মেঘের গর্জন হয়। মুহূর্তের মধ্যেই বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ৫ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। ভেঙে গেছে অনেক ঘরবাড়িও।

আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার ওবায়দুর রহমান জানান, সন্ধ্যার কালবৈশাখীর ঝড়ে বোয়ালমারীর সহস্রাইল বাজার থেকে আলফাডাঙ্গা সড়কে বড় কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে ছোটবড় যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে আমরা গাছপালা অপসারণ করেছি। এখনও কাজ চলমান রয়েছে। ওই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জানতে পেরেছি অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানাতে পারব।  

বোয়ালমারীর শেখর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ইস্রাফিল মোল্যা জানান, সহস্রাইল বাজারের প্রায় ১০টি ঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বাজারের অনেক ঘরে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজসহ অন্যান্য মালামাল ছিল। শেখর ও রূপাপাত ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।  

একই উপজেলার রূপাপাত ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, রূপাপাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে কালবৈশাখীর আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ঝড়ের পর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।  

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোর্শেদুর রহিম জানান, ঝড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মেইন লাইন কানাইপুরে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ অনেক জায়গায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বোয়ালমারীর জয়পাশা, ময়েনদিয়া এলাকায় বিদ্যুতের পিলারও পড়ে গেছে। আলফাডাঙ্গারও কয়েকটি জায়গায় বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। গাছপালা পড়ে বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি হওয়ায় অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে বিলম্ব হতে পারে।  

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য পাইনি। প্রকৃত তথ্য সংগ্রহে কাজ করছি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন ও আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৪
এমএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।