ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উজ্জ্বলের মাংস বিতানে ক্রেতার লম্বা লাইন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
উজ্জ্বলের মাংস বিতানে ক্রেতার লম্বা লাইন

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে ৬৩০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করছেন উজ্জ্বল। বাজারের দরের চেয়ে যা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কম।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতার দিবসের সকালে দেখা যায় উজ্জ্বলের মাংস বিতানের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ৬৩০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস কিনছেন ক্রেতারা।

সময় তখন সকাল ১০টা। ইতোমধ্যে দুইটি গরুর মাংস বিক্রি হয়ে গেছে। আরও একটি জবাই করা হয়েছে। লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছে মানুষ।

রোজার আগে ৫৯৫ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করেছেন উজ্জ্বল। রোজার কয়েকদিন আগে থেকে মাংসের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তখনই উজ্জ্বল জানিয়েছিলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাংসের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ নিজেই মাংস কাটছেন উজ্জ্বল। এ সময় তিনি জানান, অন্য দিনে ১২ থেকে ১৩টি গরুর মাংস বিক্রি করলেও আজ ১৬টি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করবেন।

আজ বেশি গরু জবাই হচ্ছে কেন? জানতে চাইলে উজ্জ্বল বলেন, আজ স্বাধীনতা দিবস, ছুটির দিন। অন্যান্য ছুটির দিনেও একটু বেশিই গরু জবাই করা হয়।

অন্য জায়গার চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করছেন, এতে মানুষ উপকৃত হচ্ছে। বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উজ্জ্বল বলেন, বছরের ১১ মাসে আমি লাভ করি। এ মাসে একটু কম লাভ করতে চাই, মানুষের সেবা করতে চাই। মানুষ যাতে কম দামে মাংস কিনতে পারে, আমার দেখাদেখি অন্য মাংস বিক্রেতাও কম দামে মাংস বিক্রি করতে এগিয়ে আসুন। ১১ মাস লাভ করেছে, রমজান মাস সংযমের মাস-একটু কম লাভ করুন।

তিনি বলেন, আমি কম দামে মাংস বিক্রি করছি। মুদি দোকানদারও ন্যায্য মূল্য ঘোষণা করে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে। এ রকম করে মানুষ এগিয়ে আসুক। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।

উজ্জ্বলের এ কম দামের মাংস বিক্রি বাজারে বড় প্রভাব আছে বলে মনে করেন মাংসের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, উজ্জ্বলের এই মাংস বিক্রি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। এখানকার উজ্জ্বল, আর শাজানপুরে খলিলদের কারণে বাজারে মাংসের দামে কমেছে। এখন বাজারে সর্বোচ্চ মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। উজ্জ্বল আর খলিল মাংস বিক্রেতাদের পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে। অতি মুনাফালোভী কসাইদের লাগাম পরিয়ে দিয়েছে।

৬৩০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করে লাভ করা যায়। উজ্জ্বলকে দেখে তারই দোকানের সামনের শাহজালাল মাংস বিতানও বাধ্য হয়েছে ৬৩০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করতে। তবে মিরপুর-১২ এলাকার লালমাটিয়ার খানিক দূরে ৭৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করছে। কিন্তু আধা ঘণ্টায় কোনো গ্রাহক দেখা গেল না সেখানে।

বাংলানিউজের কথা হয় আরেক মাংস ক্রেতা স্কুলশিক্ষক আসগর আলীর সঙ্গে। তিনি বেশ কিছুক্ষণ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, অন্য মাংস বিক্রেতার চেয়ে কেজিতে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা কম দামে মাংস বিক্রি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। মুক্তিযুদ্ধের আগের শোষক বলেছি পাকিস্তানি আর বিজাতীয় ব্যবসায়ীদের। এখন শোষক দেশিরাও।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
জেডএ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।