ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে বেদেপল্লীতে হামলা, ৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৪
ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে বেদেপল্লীতে হামলা, ৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

মাদারীপুর: মাদারীপুরের কালকিনির বেদেপল্লীতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে হামলায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।  

এদিকে, হামলার চারদিনেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে জানা গেছে।

অথচ, দফায় দফায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে অসহায় পরিবারগুলোকে।  

অন্যদিকে, মামলা নেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ অস্বীকার করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, কালকিনির বেদেপল্লীতে হামলার ঘটনায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি। চারদিনেও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিরাপত্তাহীনতায় পরিবাগুলো। বিচারের দাবিতে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা।

এখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে ভোট দেয় বেদে সম্প্রদায়। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হেরে গেলে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিন খানের নেতৃত্বে গত ৮ ও ৯ জানুয়ারি দুই দফা বেদে পল্লীতে হামলা চালানো হয়। এতে কালকিনির চরঠেঙ্গামারা গ্রামের বেদেপল্লীর ১৫টি বসতঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান নৌকার অনেক এজেন্ট ও কর্মী-সমর্থকরা। এ ঘটনার চারদিনেও এখনও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। কাউকে আটকও করা হয়নি। পুলিশের রহস্যময় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

বেদেপল্লীর সর্দার মনির সরদার বলেন, আমরা অসহায় মানুষ। কষ্ট করে কোনোমতে ভিটে কিনে টিনের ঘর তুলে বসবাস শুরু করি। কিন্তু এমনভাবে আমাদের ওপর হামলা চালাবে, এটা খুবই কষ্টদায়ক। থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেউ। উল্টো দফায় দফায় হুমকি আসছে, আমরা ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ চাই, পাশাপাশি দোষীদের বিচার চাই।

থানায় অভিযোগদানকারী অঞ্জনা বেগম বলেন, থানা থেকে বলছে মামলা হবে, কিন্তু হচ্ছে না। অথচ, বাকামিনের লোকজন শুধু হুমিকই দিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এর বিচার হওয়া দরকার।

ঘটনার পর এলাকা ছাড়া প্রধান অভিযুক্ত। তবে, মোবাইলফোনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।  

বদিউজ্জামান বাকামিন খান বলেন, বেদেপল্লীতে হামলার ঘটনা শুনে গিয়ে দেখি সবকিছু তছনছ। অনেক চেষ্টা করেও থামাতে পারিনি। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমি ঘটনার শুরুতে থাকলে এমন পরিস্থিতি হতো না।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মামলা নিতে কোনো সমস্যা নেই। থানায় অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীদের একজন। বিষয়টি তদন্ত চলছে, শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ আলম বলেন, বেদেপল্লীতে হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে চলছে অভিযান। এখনও পুলিশ টহল দিচ্ছে, ঘটনার পর জড়িতরা এলাকাছাড়া। তবে, কোনো অপরাধী পালিয়েও বাঁচতে পারবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

মাদারীপুর-০৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে হারিয়ে ৩৪ হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।  

অপরদিকে, পরাজিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।