ঢাকা, রবিবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্ধর্ষ চোর জ্যাক-জামাল, মালামাল বহনে কিনেছেন পিকআপ ভ্যানও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২২ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
দুর্ধর্ষ চোর জ্যাক-জামাল, মালামাল বহনে কিনেছেন পিকআপ ভ্যানও

ঢাকা: রাজধানীতে দেড়শর বেশি চুরিতে জড়িত দুর্ধর্ষ গ্রিল কাটা দুই চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মো. জাকির হোসেন ওরফে জ্যাক (৪৪) ও মো. নূর জামাল ওরফে জামাল (২৬)।

জ্যাক-জামাল নামে পরিচিত এই দুই চোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তালা কেটে দোকানে ঢুকে মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। চুরির মালামাল বহন ও বিক্রির জন্য তারা পিকআপ গাড়িও কিনেন। এছাড়া বাসা ভাড়া নিয়ে চোরাই মালামাল সেখানে মজুদ করতেন।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

তিনি জানান, সাত বছরে রাজধানীতে দেড়শর বেশি চুরি করেছে এই জ্যাক-জামাল জুটি। আজ (৩ মার্চ) দুপুরে মোহাম্দপুর থানার জাফরাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরির সরঞ্জাম এবং একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

ছয় মাস আগে জনৈক আসাদুজ্জামান নূরের নিউ মিউজিক এশিয়া নামের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা তদন্তে উঠে আসে জ্যাক-জামালের নাম। গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর বড়বাগ পলিভিটা বেকারি এলাকায় সংঘটিত সেই চুরিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৩টি মোবাইল সেট, একটি ল্যাপটপ, ২০টি মেমোরি কার্ড, ৫০০টি রিচার্জ কার্ড, নগদ অর্থসহ আনুমানিক এক লাখ ৫২ হাজার ৭৭৫ টাকার মালামাল চুরি করেন জ্যাক-জামাল। সেই চুরির দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জ্যাক-জামালকে শনাক্ত ও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোহেল (৩৫) নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোহেল জ্যাক-জামালের কাছ থেকে চুরি করা মালামাল কিনতেন।

চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জমাদি

তিনি আরও জানান, জ্যাক- জামাল সাত বছরে দেড়শরও বেশি চুরি করেছে। এই চুরির টাকায় পিকআপ ভ্যান কিনেছেন জ্যাক। সেই পিকআপ ভ্যানে চড়েই পরে চুরি করতেন তারা। চুরির মালামাল বহনের জন্য গাড়ি কেনার পরে তারা এক রাতে চার জায়গায় চুরি করেছে এরকম রেকর্ডও পাওয়া গেছে। পরে এই পিকআপ ভ্যানে করেই চুরির মালামাল বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন তারা। চুরির টাকায় তারা শুধু গাড়িই কেনেননি, চোরাই মালামাল রাখার জন্য আলাদা বাসাও ভাড়া করেছেন! সব মালামাল একসঙ্গে বিক্রি করলে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাই ওই বাসাকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে সেখানেই চুরির মালামাল রাখতেন তারা।

জ্যাক-জামাল চুরি করতে বের হতেন মধ্য রাতে।   দুইজনের মধ্যে জ্যাক গ্রিল ও তালা কাটেন। এ কাজে তার সময় লাগে সর্বোচ্চ চার সেকেন্ড। কাটার পর দোকানে ঢুকে মালামাল চুরি করতেন জামাল। তার পুরো চুরি করতে সময় লাগতো মাত্র চার মিনিট! এক রাতেই তারা একাধিক দোকানেও চুরি করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এক রাতে তারা সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত চুরি করেছে।

সাধারণত রাস্তার ওপরে থাকা ছোট ছোট পান-সিগারেটের, মোবাইল রিচার্জের, মুদির দোকানকেই টার্গেট করে তারা। কারণ এসব দোকানদার সাধারণত অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের হয়। তাই চুরি করলেও তারা মামলা করে না। এ কারণেই দেড় শতাধিক চুরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা খুবই কম। তাদের বিরুদ্ধে আগে বেশ কয়েকটি মামলার পাশাপাশি আবার নতুন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
এজেডএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।